খিলক্ষেতের ৩ মন্দির-মসজিদ পেল রেলওয়ের জমি

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
রেলভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একটি মন্দির ও দুটি মসজিদের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ছবি: প্রেস উইং

ঢাকার খিলক্ষেতে জোয়ার সাহারা মৌজায় দুটি মসজিদ ও একটি মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

বুধবার রেলভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মসজিদ ও মন্দিরের পরিচালনা কমিটির কাছে বরাদ্দপত্র তুলে দেওয়া হয়।

ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার জোয়ার সাহারা মৌজায় খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদ বরাদ্দ পেয়েছে শূন্য দশমিক ২০১১ একর, একই মৌজায় আন-নূর-জামে মসজিদের জন্য দেওয়া হয়েছে শূন্য দশমিক ০৫৫২ একর জমি। এছাড়া খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শূন্য দশমিক ০৫৬২ একর জমি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে নির্ধারিত প্রতীকী মূল্যের বিনিময়ে এসব জমি বরাদ্দ দিয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেণ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

অনুষ্ঠানে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘গতবছর দুর্গাপূজার আগে আমাকে জানানো হয় যে রেলের জমিতে একটি মন্ডপ তৈরি করা হয়েছে। আমি বলেছি, যেহেতু মন্ডপ হয়ে গেছে, তাদেরকে বলে দিও পূজা হয়ে যাওয়ার পরে যাতে মন্ডপ সরিয়ে ফেলে। কিন্তু সেটা সরানো হয়নি। পরে ওই জায়গাটা রেলের প্রয়োজন পড়লে শুধু মন্ডপ নয়, সেখানকার সকল অবৈধ স্থাপনাই সরিয়ে নেওয়া হয়।’

‘আমি বলে দিয়েছিলাম, প্রতিমা যাতে সযত্নে বিসর্জন দেওয়া হয়। বালু নদীতে প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়। কিন্তু পরে একটি ভিডিও ক্লিপে আমরা দেখেছি প্রতিমা মাটিতে পড়ে আছে। সেটা কীভাবে হলো আমি খোঁজ নিয়েছি। এ ঘটনার জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি।’

তিনি আরও জানান, মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দের আলোচনার মধ্যেই মসজিদ নিয়েও জমি সংকটের কথা জানতে পারেন। সব কিছু বিবেচনায় নিয়েই তিনটি ধর্মীয় উপাসনালয়ের জন্য এই জমি বরাদ্দ দেওয়া হলো।

রেলওয়ের জমি মসজিদ ও মন্দিরকে বরাদ্দ দেওয়াকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রোল মডেল। তারপরও বিভিন্ন সময়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা উপাসনালয়গুলোকে যারা অপবিত্র করতে চায় তাদের ধর্মীয় কোনো পরিচয় নেই, তারা দুষ্কৃতকারী, অপরাধী।’

স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সম্প্রীতি নষ্ট হয় এমন যেকোনো কর্মকাণ্ড সবাই মিলে থামাতে হবে। আমরা নিজেরা আগে থামাতে চেষ্টা করব সেটা না হলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে কঠিন ব্যবস্থা নেব।’

হিন্দু সম্প্রদায়ের বেহাত হয়ে যাওয়া দেবোত্তর যেসব সম্পত্তি নিয়ে আদালতে কোনো মামলা নেই সেগুলো উদ্ধারে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারি ড. শেখ মইনউদ্দিন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন, ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মো. মহিউদ্দিন আরিফ, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিকসহ এলাকার মসজিদের ইমাম ও মন্দির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, স্থানীয় বাসিন্দা এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা।

এ ঘটনাকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে রেল বিভাগের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *