বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মঙ্গলবার লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছানোর পর তাকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে দলের নেতাকর্মীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। দলীয় সূত্র জানা গেছে, চার মাস পর বিএনপি নেত্রীর দেশে ফেরা নিয়ে দলের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে সাজ সাজ রব।
বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তিনি। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন তার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান, ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, এপিএস মাসুদুর রহমান এবং দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রূপা হক।
দলের নেতারা জানান, চিকিৎসায় বিএনপি নেত্রী আগের চাইতে ‘এখন অনেক সুস্থতা’ বোধ করছেন। সে কারণেই দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
বিমানবন্দরে বিএনপি চেয়ারপারসনের অভ্যর্থনাকে কেন্দ্র করে তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাচ্ছে পুলিশ। সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত শনিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নেত্রীর দেশে ফেরা নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রচণ্ড আবেগ আছে। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষ আজকে উৎসাহিত, উজ্জীবিত যে তাদের প্রিয় নেত্রী দেশে ফিরে আসবেন। তাকে যথাযথ অভ্যর্থনা জানানো, এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। শুধু বিএনপি নয়, সারা দেশের মানুষ আজকে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত হয়ে আছে।’
মির্জা ফখরুল আরো জানান, এ নিয়ে তারা যৌথ সভা করেছেন। সকলে যাতে খালেদা জিয়াকে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে অভ্যর্থনা জানাতে পারেন, দলের পক্ষ থেকে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সোমবার ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত সাংবাদিকদের জানান, এর আগে খালেদা জিয়া যেদিন দেশের বাইরে যান, সেদিন রাস্তায় অনেক যানজট হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তিনি যখন আসবেন তখন যেন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রেখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সাজানো হচ্ছে।’
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সারওয়ার জানান, বিএনপি নেত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে যানজট সৃষ্টি না হওয়ার পাশাপাশি নগরবাসী যেন কোন ধরনের দুর্ভোগে না পড়েন, সে বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে, বিএনপির নেতাকর্মীদের রাস্তায় না নেমে ফুটপাতে অবস্থান, সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া ও মঙ্গলবার মেট্রোরেলের ট্রিপ বাড়ানোর প্রস্তাবনা।
ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বহু বছর গুলশানের বাসভবনে ছিলেন, সেখান থেকে চিকিৎসার জন্য চার মাসের জন্য বিদেশ যান তিনি’, এ কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘দেশে ফিরে তিনি গুলশানের বাসাতেই থাকবেন। সেখানে আগের চেয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হচ্ছে।’
গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এবারো তিনি ফিরছেন সেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই।