কাতারের গরম আবহাওয়ায় ঘাম ঝরিয়ে লড়াই করল বসুন্ধরা কিংস, আর তার ফল একটাই, এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের মূলপর্বে নিশ্চিত জায়গা। ম্যাচের শুরুতেই যে গোলের দেখা পেয়েছিল তারা, সেটিই শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত করল।
ম্যাচের ৬ মিনিটেই সানডে ইমানুয়েলের শট প্রতিপক্ষের জালে কাঁপন তোলে। মোহামেডান থেকে যোগ দেওয়া এই নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড যেন প্রমাণ করলেন, কেন তাকে দলে ভিড়িয়েছে কিংস। এই গোলের পর থেকেই খেলায় আক্রমণ-প্রতিরক্ষার ভারসাম্য রক্ষা করে এগিয়েছে তারা।
কোচবিহীন এই সফরের আগে সমালোচনার কমতি ছিল না। শেষ মুহূর্তে কোচ দল না নিয়ে ইরাকের ক্লাবে যোগ দেওয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রস্তুতি নিয়ে। কিন্তু মাঠে নেমে সেই সমালোচনার জবাব দিয়েছে কিংস। ডোরিয়েল্টন, সানডে, রাকিবদের সমন্বয় ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রথমার্ধের ৪২ মিনিটে রাফায়েল অগুস্তোর পায়ে আসে নিশ্চিত সুযোগ। কিন্তু নিজে শট না নিয়ে রাকিবকে পাস দিলে হয়তো লিড দ্বিগুণ হতে পারত। গ্যালারি তখনও গমগম করছে বাংলাদেশের সমর্থকদের গলায়। কাতারের মাটিতে এমন সমর্থন বিরলই বটে।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামেন কিউবা মিচেল। সান্ডারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ থেকে আসা এই ফরোয়ার্ডকে দেখার অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। ৬৬ মিনিটে রাফায়েলের বদলি হিসেবে নেমেই গতি বাড়িয়ে দেন আক্রমণে। ৮৬ মিনিটে তার কর্নার থেকে রাকিবের হেডে জালের দেখা পেতে পারত কিংস, কিন্তু আল কারামাহ গোলরক্ষক সেটি রুখে দেন। শেষ দিকে ফাহিমের শটও অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
প্রতিপক্ষ সিরিয়ান ক্লাব আল কারামাহ ম্যাচ জুড়ে একের পর এক আক্রমণ তুলেছে। বল দখলে এগিয়ে ছিল তারাই, কিন্তু শ্রাবণের দৃঢ়তায় ও ডিফেন্সের শৃঙ্খলায় গোল পাওয়া হয়নি। কিংস বল দখল করেছে মাত্র ৪০ শতাংশ সময়, তবে ১০টি শটের মধ্যে ৪টি ছিল অন টার্গেট। অপরদিকে, শ্রাবণ একাই ৫টি গুরুত্বপূর্ণ সেভ করে ম্যাচের নায়ক হয়ে ওঠেন।
শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে কাতারের গ্যালারি ভরে যায় লাল-সবুজ উল্লাসে। কোচ ছাড়াই, প্রচণ্ড গরমে, শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এমন জয় বসুন্ধরা কিংসের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন। এখন তারা এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের মূলপর্বে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হয়ে এগিয়ে যাবে নতুন স্বপ্ন নিয়ে।