শিক্ষার্থীদের টানা ১০ দিনের আন্দোলনের মুখে খুলে দেওয়া হলো খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আবাসিক হল। বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকাল থেকে হলগুলো খুলে দেওয়া হয়। এ দিন দুপুরে সিন্ডিকেটের ১০২তম জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাশাপাশি ১৪ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বুধবার সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে, ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আমরণ অনশন চতুর্থ দিনে পৌঁছেছে। সকালে অনশনকারীদের সাথে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার সাক্ষাৎ করলেও সমস্যার সমাধান হয়নি বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমান ভূঞার সই করা এক বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, গত ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১০১তম জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম চালু এবং ২ মে আবাসিক হলগুলো খোলার বিষয়ে বলা হয়।
তবে বুধবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১০২তম জরুরি সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো ২ মে এর পরিবর্তে ২৩ এপ্রিল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল হল খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ এবং ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ২ মে হল খোলার সিদ্ধান্ত নেয়।
দুই রাত খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়ে ১৫ এপ্রিল তালা ভেঙে ছয়টি হলে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে ছাত্রীরাও হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে ছাত্রীরাও হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন।
অনশনে অনড় শিক্ষার্থীরা
অন্যদিকে, বুধবার সকাল পৌনে ১০টায় কুয়েট ক্যাম্পাসে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন উপদেষ্টা সি আর আবরার। প্রায় আধঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। শিক্ষার্থীরা অনড় অবস্থানে থেকে জানিয়ে দেন, এক দফা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন তারা।
পরে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে। আমি শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারা তাৎক্ষণিক ঘোষণা না পেলে অনশন ভাঙবেন না বলেই জানিয়েছেন। আইন মেনে সমাধান হবে—এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসুস্থ কয়েকজনকে অন্তত পানি খাওয়ার অনুরোধ করলেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরই মধ্যে বৈশাখের প্রখর রোদ ও গরমে অনশনকারী পাঁচ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। অনেকে দুর্বলতা ও রক্তচাপ কমে যাওয়ার মতো সমস্যায় ভুগছেন।