কারবালার স্মরণে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আশুরার দিনে তাজিয়া মিছিল করেছে শিয়া মুসলমানরা। খালি পায়ে, বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম তুলে তারা মিছিল নিয়ে ঘুরেছেন প্রধান সড়কে।
রোববার সকালে পুরান ঢাকার হোসাইনী দালানে জড়ো হয় হাজারো শিয়া মুসলমান। সকাল ১০টায় ইমামবাড়া থেকে তাজিয়া মিছিল শুরু হয়।
তাজিয়া মিছিল হোসাইনী দালান রোড, বকশীবাজার লেন, আলিয়া মাদ্রাসা রোড, উমেশ দত্ত রোড, উর্দু রোড মোড়, হরনাথ ঘোষ রোড, লালবাড় চৌরাস্তা মোড়, গোর-এ-শহীদ মাজার মোড়, এতিমখানা মোড় হয়ে সামনে দিকে এগিয়ে যায়। পথে আজিমপুর, নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত ঘুরে, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় হয়ে ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে আংশগ্রহণকারীদের পরনে ছিল কালো পোশাক, মাথায় কালো পট্টি, কারও হাতে আবার ঝালর দেওয়া লাল, কালো, সোনালি রংয়ের ঝাণ্ডা দেখা গেছে। মিছিলের সামনে ছিল ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেনের দুটি প্রতীকী ঘোড়া।

তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় ২০১৫ সালে ইমামবাড়ায় জঙ্গি হামলা হয়। এ ঘটনার পর আশুরার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। রোববার তাজিয়া মিছিলের সামনে-পেছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সতর্ক উপস্থিতি দেখা গেছে।
পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী তাজিয়া মিছিলে লাঠি, বর্শা, ছুরি, বল্লম, তলোয়ারের মত ধারালো অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ছিল।

১০ মহররম মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক। হিজরি ৬১তম বর্ষের এই দিনে হজরত মুহাম্মদের (স.) দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন। মুসলমানরা, বিশেষ করে শিয়া মুসলমানরা ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেন। তবে শিয়া মুসলমানদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের অনেকে তাজিয়া মিছিলে অংশ নিয়ে থাকে উৎসব আমেজে।

ঢাকায় হোসাইনী দালান ইমামবাড়া ছাড়াও বড় কাটরা, বিবিকা রওজা, মোহাম্মদপুরের বিহারী ক্যাম্প, শিয়া মসজিদ, মিরপুর পল্লবী বিহারী ক্যাম্পসহ কয়েকটি জায়গায় আশুরার আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়। শিয়া মুসলমানদের আশুরার আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে রোববার সরকারি ছুটি ছিল।