কাজ শেষ হতে বাকি এক বছর, আগেই নদীর তীর রক্ষা বাঁধে ধস

টাইমস ন্যাশনাল
3 Min Read
নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই আখিরা শাখা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ ধসে পড়েছে। ছবি: ইউএনবি
Highlights
  • ‘তাড়াহুড়োর কারণে কাজটিতে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। ওই খাল লিজ দেওয়া ছিল। এপ্রিল পর্যন্ত তাতে পানি ছিল, আবার মে মাসে নতুন করে পানি জমেছে। মূলত পানি ও মাটির সমস্যার কারণে এই ধসের সৃষ্টি হয়েছে।’

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই আখিরা শাখা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় শনিবার বাঁধ ধসে পড়েছে। বৃষ্টির মধ্যে তড়িঘড়ি করে কাজ করায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) তত্ত্বাবধানে বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে নদীর তীর সংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে।

পাউবো জানায়, নদী তীর সংরক্ষণ, খালবিল পুনঃখনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন (এক সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় রংপুরের পীরগঞ্জের চতরা ইউনিয়নে ৮০০ মিটার নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের কাজ চলছে। পাঁচ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকার কাজটি করছেন রংপুরের ঠিকাদার ভরত প্রসাদ। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দুই বছর মেয়াদী কাজটি শুরু হয়। কাজটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৬ সালের ৩০ জুনে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ প্রায় শেষ। বসানো হচ্ছে ব্লক। তবে, ব্লক বসানো শেষ হওয়ার আগেই অনেক অংশ ধসে পড়েছে। ওয়াকওয়ের টাইলস উঠে যাচ্ছে। পাশে নেই কোনো সাইনবোর্ডও।

স্থানীয়রা বলেন, কাজের মান এতই নিম্নমানের যে বন্যা হলে তীর সংরক্ষণ বাঁধ রক্ষা করাই সম্ভব হবে না। মূলত মাটি ফেলে তা সঠিকভাবে ডাম্পিং করা হয়নি। মাটি নরম থাকায় ব্লক ঠিকমতো থাকছে না।

ব্লক ধসে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও নিম্নমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

কাজের তদারকিতে থাকা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক শ্যামল চন্দ্র রায় বলেন, কাজের মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। যেখানে যা সমস্যা হচ্ছে বা হবে সব মেরামত করা হচ্ছে।

ঠিকাদার ভরত প্রসাদ বলেন, দুইপাশে ৪৮০ মিটার কাজ প্রায় শেষ করেছি। ১৩০ মিটার কাজ ঠিক আছে। তবে কোথাও কোথাও মাটির লেয়ারে সমস্যা থাকায় ধসে যাচ্ছে।

‘একবার ঠিক (মেরামত) করেছি, আবারও সমস্যা হয়েছে। এই মৌসুমে ঠিক করা যাবে না। মাটির লেয়ারে সমস্যা ছিল। পরিস্থিতি ভালো হলে আবার কাজটি ঠিকভাবে করা হবে’ বলেও জানান তিনি।

প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী টিএম ইসরাফিল হক বলেন, ‘কোনো অনিয়ম হয়নি। প্রকল্পটি ছিল সৌন্দর্যবর্ধনের। চুক্তিতে ডাম্পিং ছিল না। অতিরিক্ত পানির চাপের কারণে কিছু অংশ ধসে গেছে। আমরা ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে সেটি মেরামত করতে বলেছি।’

পাউবো রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তাড়াহুড়োর কারণে কাজটিতে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। ওই খাল লিজ দেওয়া ছিল। এপ্রিল পর্যন্ত তাতে পানি ছিল, আবার মে মাসে নতুন করে পানি জমেছে। মূলত পানি ও মাটির সমস্যার কারণে এই ধসের সৃষ্টি হয়েছে।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *