জাতীয় দলে ফেরার আলোচনায় নুরুল হাসান সোহান ছিলেন গেল মাস ছয়েক ধরেই। আগে-পরে তাকে জায়গা করেই দিতে হতো নির্বাচকদের। অন্তত দফায় দফায় প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর কথাতেও সেই সুর ছিল। এশিয়া কাপের দলেও তাই জায়গা পেয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মার সোহান। কিন্তু সাইফ হাসানের অন্তর্ভুক্তি এসেছে চমক হিসেবে। কারণ ব্যাক আপ ওপেনারের আলোচনায় ছিল না তার নাম।
শনিবার প্রধান নির্বাচক লিপু খন্ডন করলেন তাদের দুজনকে এশিয়া কাপের দলে নেয়ার যুক্তি। বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক জানান, দুটি আলাদা পজিশনে ব্যাক আপ হিসেবেই নেয়া হয়েছে তাদের।
সর্বশেষ ২০২৩ সালে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন সোহান। এরপর দীর্ঘদিন ছিলেন না নির্বাচকদের সুনজরে। যদিও এই সময়টায় ঘরোয়া ক্রিকেটে বিশেষত ওয়ানডে ফরম্যাটে দারুণ ছন্দে ছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। লাল বলে ‘এ’ দলের হয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটা সেঞ্চুরিও আছে তার। অবশ্য চলতি টপ এন্ড টি-টোয়েন্টিতে ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস আছে শুধু দুটি।
যদিও শ্রীলংকা সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজে সোহানকে না রাখায় প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছিল প্রধান নির্বাচককে। সাম্প্রতিক সেই স্মৃতিচারণ করে লিপু বলেন, ‘প্রত্যেকটা নির্বাচনের পেছনে একটা প্রক্রিয়া থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ থেকেও ডিপ ডাইভ থিংকিং থাকে। কোনো সময় হয়তো হয় আমরা দলে নিই না ফর গ্রেটার ইন্টারেস্ট। সোহানকে নিয়ে অনেক আলাপ হয়েছিল শ্রীলংকা সফরের টি-টোয়েন্টি দলে। আমরা তখন মনে করেছি, আমাদের দলের যে ফরমেশন যদি সব ঠিকঠাক থাকে তাহলে তার প্রথম একাদশে খেলার সুযোগটা কম।’
শ্রীলংকা সিরিজে সুযোগ না দিলেও এবারের আসন্ন এশিয়া কাপে সোহানকে ব্যাক আপ হিসেবেই দলের সাথে পাঠানো হচ্ছে। মূলত পাঁচ বা ছয় নম্বর ব্যাটিং পজিশনের জন্যই ভাবা হচ্ছে তাকে। প্রধান নির্বাচক আরো বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমাদের লাইক টু লাইক রিপ্লেসমেন্টের জায়গায় পারফর্মার নেই। আমাদের কনফিডেন্সের যে জায়গাটা, সোহানের এপ্রোচের কারণে পাচে-ছয়েআমাদের একটা ভালো চয়েজ। যেমন জাকের আলী আঘাত পেয়েছিল শ্রীলংকা সিরিজে। সেই হিসেবে ব্যাক আপের জায়গায় আমরা তাকে সেরা মনে করছি।’
জাতীয় দলের হয়ে দুই ফরম্যাটে খেলেছেন সাইফ হাসান। সর্বশেষ ২০২১ সালে খেলেছেন টেস্ট ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টিতে দেখা গেছে ২০২৩ সালের এশিয়ান গেমসে। জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে গেছেন নিয়মিত। ডারউইনে চলমান টপ এন্ড টি-টোয়েন্টিতে করেছেন একটি ফিফটি, আছে ৪৫ রানের একটা ইনিংসও। এর আগে গ্লোবার সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের হয়ে যদিও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
সাইফকে দলে নেয়ার ব্যাখায় প্রধান নির্বাচক বলেছেন, টপ অর্ডারে ব্যাট করতে পারার সক্ষমতার সাথে পার্ট টাইম বোলিংটাই তাকে এগিয়ে রেখেছে বাকিদের চেয়ে। লিপু বলেন, ‘আমাদের ওপরের দিকে একটা বোলারের দরকার ছিল, সেটা সাইফ ভালোভাবে করতে পারেন। আমরা এবার তাকে অন্তর্ভুক্ত করেছি। নাম্বার ফোনে ব্যাট করার মতো ক্যাপেবল ব্যাটার এবং প্রয়োজনে যদি কোনো পরিস্থিতির তৈরি হয় দলের জন্য ওপেন করার সক্ষমতা রাখেন। আমরা এরকম মাল্টিপল প্লেসে এড্রেস করার মতো প্লেয়ার খুঁজছি। দলের তাদের প্রয়োজন অনেক বেশি।’
প্রয়োজনে ওপেনিং কিংবা টপ অর্ডারেও সাইফকে ভাবছে টিম ম্যানেজেমেন্ট, ‘যদি তাওহিদ হৃদয়ের যদি কোনো সমস্যা হয়, কোনো ইনজুরি হয়, আমরা মনে করি এই দুটা জায়গায় তিনি কভার করতে পারবেন। তারপরেও আমাদের বাড়তি অপশন আছে, লিটন দাস আছেন, তিনি নাম্বার থ্রিতে খেলেন। তিনিও যেকোনো সময় ওপেনিং করে দলের চাহিদা মেটাতে পারেন। যদি কোনো কারণে অপজিশন, ডিফারেন্ট স্ট্র্যাটেজিতে দলকে যেতে হয়।’