সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর পর্যটন এলাকা থেকে পাথর লুটের ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার লুটের শিকার হয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের জাফলং জিরো পয়েন্ট। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে টানা তিন দিনে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর লুট হয়েছে। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৬০ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে গোয়াইনঘাট থানায় একটি মামলা করেছেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোনায়েম। আর এরপরই বিষয়টি নজরে আসে।
মামলায় অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগ মো. আব্দুল মোনায়েম লিখেছেন, গত ৭, ৮ ও ৯ আগস্ট রাত ১টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে স্থানীয় চোরাকারবারীরা প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি বারকি নৌকা ব্যবহার করে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে পাথর লুট করে নিয়ে যায়।
সেখানে আরও বলা হয়, পরিবেশ অধিদপ্তর ২০১৫ সালে জাফলং-ডাউকি ও পিয়াইন নদীর মধ্যবর্তী প্রায় ১৪.৯৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। এরপরও সরকারি আইন অমান্য করে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন চলছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও রাতের আঁধারের সুযোগ নিয়ে চোরাকারবারীরা লুটকৃত পাথর বিভিন্ন জলযান ও স্থলযানের মাধ্যমে সরিয়ে নেয়।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার তোফায়েল আহমদ জানিয়েছেন, মামলায় আসামির সংখ্যা ১০০ থেকে ১৫০ জন উল্লেখ থাকলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

জৈন্তাপুরে রাংপানি নদী থেকে ৩৫ ট্রাক ও বালু-পাথর জব্দ
একই দিন সিলেটের পর্যটন এলাকা জৈন্তাপুরের রাংপানি নদীতে অভিযান চালিয়েছে টাস্কফোর্স। অভিযানে ৩৫ ট্রাক বালু ও পাথর জব্দ করা হয়।
জব্দ করা আনুমানিক ২০ হাজার ঘনফুট পাথর রাংপানি নদীতে পুণঃস্থাপন এবং ২৮ হাজার ঘনফুট বালু উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা হয় বলে জানান জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) ফারজানা আক্তার লাবনী।
এছাড়া একটি স্থানীয় ক্রাশার মেশিন থেকে প্রায় ৯ হাজার ৫০০ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়, যা রাংপানি নদী থেকে উত্তোলিত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জব্দকৃত এসব পাথর বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ক্রাশার মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার নির্দেশও দেয় টাস্কফোর্স।
সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পাথর মজুদবিরোধী অভিযানে বিজিবি
অন্যদিকে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হকের নেতৃত্বে মঙ্গলবার সীমান্তবর্তী উৎমা বিওপির একটি টহলদল কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের আদর্শগ্রামে অভিযান চালায়। এসময় ওই এলাকায় প্রায় দুই লাখ ঘনফুট পাথর মজুদ রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে সন্ধান পাওয়া যায়।
বিজিবি জানিয়েছে, পরবর্তীতে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইফ্রাহিম ইকবাল চৌধুরীর নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালিয়ে উদ্ধারকৃত পাথরের সঠিক পরিমাপ দেখা হচ্ছে।