সপ্তাহব্যাপী জল্পনা-কল্পনা ও অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের একটি দলবাহী রয়্যাল এয়ার ফোর্সের (আরএএফ) বিমান রোববার দুপুরে থিরুভানানথাপুরম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
কেরালার থিরুভানানথাপুরমে রয়্যাল এয়ার ফোর্সের একটি এফ-৩৫বি যুদ্ধবিমান মেরামতের জন্য তারা এসেছে। ১৪ জুন কারিগরি ত্রুটির কারণে জরুরি অবতরণের পর থেকে বিমানটি বিমানবন্দরে অকার্যকর অবস্থায় অবস্থান করছে।
ফ্লাইট ডেটা অনুযায়ী, আরএএফ ব্রাইজি নর্টন, অক্সফোর্ডশায়ার থেকে শুক্রবার বিমানটি উড্ডয়ন করে। এটি আরএএফ-এর বৃহত্তম ঘাঁটি যেখানে প্রায় ৫ হাজার ৮০০ জন কর্মী রয়েছে। সেদিনই বিমানটি সাইপ্রাসের ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপে অবস্থিত আরএএফ আকরোটিরি সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছে। পরদিন শনিবার আকরোটিরি থেকে উড্ডয়ন করে সিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে। রোববার সকালে ওমানের মাসকাট থেকে রওনা দিয়ে দুপুরে থিরুভানানথাপুরম পৌঁছে।
সূত্র জানায়, এই দলে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৭ জন প্রকৌশলী রয়েছেন। যুক্তরাজ্য থেকে আসা রয়্যাল এয়ার ফোর্সের বিমানটি দলটিকে নামিয়ে দিয়ে সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে যাবে। দলটি কয়েকদিন কেরালায় অবস্থান করে স্থানীয়ভাবে বিমানটি মেরামত করার সম্ভাব্যতা যাচাই করবে।
বর্তমানে বিমানটি থিরুভানানথাপুরম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের বে নম্বর ৪-এ অবস্থান করছে। সেখানেই মেরামতের চেষ্টা করা হবে।
যদি স্থানেই মেরামত সম্ভব না হয়, তবে বিমানটিকে টেনে হ্যাঙ্গার সুবিধায় নিয়ে যাওয়ার বিকল্প বিবেচনা করা হবে। তবে যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে বিমানের লেজ ও ডানা খোলার মাধ্যমে এটিকে বাতাসে তুলে যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। রোববার বিমানটির কারিগরি পরিদর্শন শুরু হবে। পরিদর্শনের পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানায় সূত্র।
বিমানটি দীর্ঘ সময় ধরে গ্রাউন্ডেড থাকার কারণে এটি ভারতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং ব্যাপক গণমাধ্যম কাভারেজ ও ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই আশাবাদ ব্যক্ত করছিল যে, কেরালায় বিমানটির মেরামত ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা পরীক্ষা সম্পন্ন হলে এটি আবার রয়্যাল এয়ার ফোর্সের সক্রিয় বহরে যোগ দেবে। তবে বিশেষজ্ঞ দল আসতে বিলম্ব হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক মিম এবং জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে।
বিমানটি জরুরি অবতরণ করেছিল মূলত ভারত মহাসাগরে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে। তবে এতে এমন কিছু গুরুতর কারিগরি সমস্যা ছিল, যা স্থানীয় ক্রুদের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব হয়নি।