যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ’-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘যদি বর্তমান ইরানি সরকার ইরানকে আবার ‘‘মহান’’ করে তুলতে ব্যর্থ হয়, তবে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন কেন হবে না?’
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান। মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোয় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প।
তিনি আরও লেখেন, ‘স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, ইরানের প্রায় সব পারমাণবিক স্থাপনাতেই প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ বললেই সেটা যথার্থ হয়। সবচেয়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ভূগর্ভের অনেক গভীরে- একেবারে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভেদে।’
ইরান এখনো তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, কড়াভাবে সুরক্ষিত ফর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় তিনটি স্থানে বড় ধরণের ক্ষতির চিহ্ন রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি বিশাল গর্ত, যা বিশেষজ্ঞদের মতে বাংকার-ধ্বংসকারী বোমার আঘাতে সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি, একটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা ঐ পারমাণবিক স্থাপনাকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বসানো হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে বলেন, ফর্দো স্থাপনায় আসল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ভূগর্ভে, তবে এখনো সেই ক্ষতির প্রকৃত মাত্রা নির্ধারণ করা যায়নি।
এর আগে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, ‘জায়নবাদী শত্রু একটি বড় ভুল করেছে, একটি ভয়াবহ অপরাধ করেছে; এর জন্য অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে- এবং তারা সেই শাস্তি এখনই পাচ্ছে ।’
১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালানোর পর, ইরানও পাল্টা প্রতিরোধে নামে। ওই ঘটনার পর থেকেই আয়াতুল্লাহ খামেনি নিরাপত্তার জন্য নিজ বাসভবন ত্যাগ করে একটি বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি সরাসরি যোগাযোগ কার্যত বন্ধ রেখেছেন।
৮৬ বছর বয়সী এই নেতা আশঙ্কা করছেন, তাকে হত্যার জন্য ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্র অভিযান চালাতে পারে। এমন পরিস্থিতির জন্য তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে পরিবর্তনের নির্দেশনাও আগেভাগেই দিয়ে রেখেছেন।