ইরানের পারমাণবিক বাংকার ধ্বংস করতে পারে যে মার্কিন বোমা

2 Min Read
‘বি-২ স্পিরিট’ ফাইটার বিমান থেকে ছোড়া হচ্ছে 'জিবিইউ-৫৭এ/বি ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর' বোমা। ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

ইরানের ভূগর্ভে নির্মিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর আঘাত হানতে সক্ষম যেসব অস্ত্র রয়েছে, তার একটি এখনো অব্যবহৃতই রয়ে গেছে। অবশ্য সেটি এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের নাগালের বাইরে।

এটির নাম ‘জিবিইউ-৫৭এ/বি ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর’ (এমওপি), যা সম্পূর্ণভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে। এমওপি কোনো পারমাণবিক বোমা নয়। অর্থাৎ, এটি থেকে নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণ ঘটে না।

কিন্তু এটি এমন একটি নন-নিউক্লিয়ার ‘বাংকার ব্লাস্টার’ বোমা, যা মাটির নিচের বাংকার ধ্বংস করে ফেলতে পারে। এই ধরনের বোমার দিক থেকে এটি পৃথিবীতে সবচেয়ে বড়।

নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই শক্তিশালী বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ৩০ হাজার পাউন্ড বা ১৩ হাজার ৬০০ কিলোগ্রাম।

এটি সম্ভবত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ফোর্ডো কমপ্লেক্সকেও ভেদ করে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে, যা পাহাড়ের অনেক নিচে অবস্থিত।

এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে এমওপি ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি।

ফোর্ডো কোথায়?

ইরানের পবিত্র নগরী কোম-এর নিকটবর্তী পাহাড়ি অঞ্চলের নিচে গড়ে তোলা হয়েছে একটি গোপন ও শক্তিশালী পারমাণবিক স্থাপনা-ফোর্ডো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট। স্যাটেলাইট চিত্র ও আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে, এটি বর্তমানে ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত পারমাণবিক কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, স্থাপনাটির প্রধান হলগুলো মাটির ৮০ থেকে ৯০ মিটার নিচে অবস্থিত, যা আধুনিক যুদ্ধবিমান বা বাঙ্কার-ধ্বংসী বোমা দিয়েও সহজে ধ্বংস করা সম্ভব নয়।

‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ বোমার সক্ষমতা কতটুকু
মার্কিন সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ বোমা যাকে বিশাল শক্তিধর অনুপ্রবেশকারী বলা হয়। এটি বিস্ফোরণের আগে প্রায় ২০০ ফুট গভীর পর্যন্ত পাথর ও কংক্রিট ভেদ করতে পারে।

সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্র বা বোমা যেখানে কাছাকাছি বা তলায় আঘাত করে বিস্ফোরিত হয়, এই বোমার বিশেষ নকশা লক্ষ্যবস্তুর গভীরে ঢুকে তারপর বিস্ফোরণের জন্য তৈরি।

ওয়াশিংটনের কৌশলগত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ মাসাও ডাহলগ্রেন বলেন, ‘এ ধরনের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসের জন্য ইস্পাতের অত্যন্ত শক্ত আবরণযুক্ত বোমার প্রয়োজন হয়, যা পাথরের স্তর ভেদ করে ভেতরে পৌঁছাতে পারে।’

৬ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ এই বোমাটিতে রয়েছে বিশেষ ফিউজ, যাতে অত্যধিক ধাক্কা বা চাপের মধ্যেও তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণ না ঘটে।

‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ নকশার কাজ শুরু হয় ২০০০ সালের শুরুর দিকে এবং ২০০৯ সালে বোয়িং কোম্পানির কাছ থেকে বিশটি বোমার অর্ডার দেওয়া হয়।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *