ইইউ-মেক্সিকোর পণ্যে ৩০ শুল্ক আরোপ করা হবে: ট্রাম্প

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র ৩০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যদি এই দুই বাণিজ্যিক অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দিতে চায়, তাহলে আরও বেশি হারে আমদানি শুল্ক বসানো হবে।’

২৭ সদস্যের ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। এই সপ্তাহের শুরুতে জানিয়েছিল যে তারা ১ আগস্টের আগে ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা করছে।

ট্রাম্প আরও ঘোষণা করেন, ১ আগস্ট থেকে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা ও ব্রাজিল থেকেও পণ্যে নতুন শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। একই ধরনের চিঠি এই সপ্তাহে বেশ কিছু ছোট বাণিজ্য অংশীদার দেশকেও পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েনকে পাঠানো এক চিঠিতে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে বছরের পর বছর আলোচনা করেছি এবং সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি আমাদের এসব দীর্ঘমেয়াদি, বড় এবং স্থায়ী বাণিজ্য ঘাটতির দায় থেকে মুক্ত হতে হবে। এগুলো আপনাদের শুল্ক, অশুল্ক নীতি ও বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি আরও লেখেন: ‘আমাদের সম্পর্কটি, দুর্ভাগ্যবশত, কখনোই পারস্পরিক ছিল না।’

ইইউ ট্রাম্পের সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু হয়ে আসছে বহুবার। ২ এপ্রিল তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, ইইউসহ একাধিক বাণিজ্য অংশীদারের পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। পরে তিনি হুমকি দেন, আলোচনায় অগ্রগতি না হলে ইইউ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হবে।

ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলস ৯ জুলাইয়ের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশায় ছিল। তবে এখনো এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতির ঘোষণা আসেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৩৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার।

ভন ডার লায়েন বলেন, ইইউ ১ আগস্টের আগেই একটি চুক্তির পথে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। বিশ্বে খুব কম অর্থনীতি রয়েছে যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো উন্মুক্ততা ও ন্যায্য বাণিজ্যচর্চার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘তিনি বিশ্বাস করেন একটি ন্যায্য চুক্তি সম্ভব, এবং আটলান্টিকের দুই পাশে বাণিজ্যযুদ্ধ বাধানো অর্থহীন হবে।’

ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কোফ সামাজিক মাধ্যমে বলেন, ‘ইইউ ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ়চেতা থাকতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উভয়ের উপকারে আসে এমন একটি চুক্তির জন্য কাজ করতে হবে।’

জার্মানির অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রির অ্যাসোসিয়েশন সতর্ক করে বলেছে, জার্মান গাড়িনির্মাতা ও সরবরাহকারীদের জন্য খরচ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এবং এই বাণিজ্য দ্বন্দ্বের আরও বাড়ার সম্ভাবনাকে ‘দুঃখজনক’বলে আখ্যায়িত করেছে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টকে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, দেশটি উত্তর আমেরিকাকে একটি ’মাদক পাচারের খেলার মাঠ’ হওয়া থেকে থামাতে যথেষ্ট কিছু করেনি।

ইইউ ও মেক্সিকোকে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, যদি এ দুই বাণিজ্যিক অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পাল্টা হিসেবে নিজেরাও শুল্ক বসায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সেই ৩০ শতাংশের ওপর আরও শুল্ক বসাবে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *