যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে মামলায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চার কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। হেগভিত্তিক আদালত এই পদক্ষেপকে নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘও জানিয়েছে, আইসিসির কার্যক্রমে তাদের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।
স্থানীয় সময় বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক ঘোষণায় বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চার কর্মকর্তার ওপর এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো সম্পদ থাকলে তা জব্দ করা হবে।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন আইসিসির বিচারক কানাডার কিম্বারলি প্রোস্ট (প্রসিকিউটর), ফ্রান্সের নিকোলা গিলু, ফিজির আইনজীবী নাজহাত শামিম খান ও সেনেগালের মামে মানদিয়ায়ে নিয়াং।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে তদন্ত অনুমোদনের রায়ে অংশ নেওয়ায় প্রোস্টকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। অন্যদিকে, গাজায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুমোদনের কারণে গিলুকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। একই মামলায় শামিম খান ও নিয়াংও নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছেন।
বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইসিসি এর আগেও ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিল। সাবেক প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান ও আরও কয়েকজন বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। গত মে মাসে যৌন অসদাচরণের অভিযোগে তদন্তের মুখে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান করিম খান।
নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়ে আইসিসি বলেছে, এই পদক্ষেপ আদালতের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার ওপর সরাসরি আক্রমণ। এটি আদালতের সদস্য রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা এবং লাখ লাখ ভুক্তভোগীর প্রতি চরম অবমাননা।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিখ বলেছেন, একের পর এক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তবে আইসিসির কার্যক্রমে জাতিসংঘ পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত রাখবে।