ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শুধু শাসক বদল হয়েছে, কিন্তু শাসনব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দিন উমর।
তিনি বলেছেন, ‘অনেকে ভেবেছিল- দ্বিতীয় স্বাধীনতা। কিন্তু আসলে দেখা গেল, এই পরিবর্তন সবার জীবনে পরিবর্তন আনেনি। এই পরিবর্তনটা শ্রেণি-বৈষম্যের কোনো পরিবর্তন ঘটায়নি।’
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের উদ্যোগে ‘সংস্কার নয়- জনগণের সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে শ্রমিক-কৃষকের গণঅভ্যুত্থানের রাজনৈতিক প্রস্তুতি নিন’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানকে ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’ বলে উল্লেখ করে দলটির সভাপতি বদরুদ্দিন উমর ‘গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির’ উত্তরণ না ঘটায় ছাত্র নেতৃত্বের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা সমাজের বড় কোনো সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করেনি। তারা যে আন্দোলনটা করেছিল, সেটা হলো সরকারি চাকরির কোটা সুবিধার জন্য। এটা শ্রেণি পরিবর্তনের আন্দোলন না, এটা ছিল সুযোগ পুনর্বণ্টনের আন্দোলন। কিন্তু দমনপীড়নের কারণে, দীর্ঘদিন কোনো আন্দোলন করতে না পেরে, সেই ক্ষোভের বর্হিপ্রকাশ ঘটাতে ছাত্রদের বিক্ষোভে যুক্ত হয় জনগণ, ফলে গণঅভ্যুত্থান ঘটে।’
‘গত এক বছরে এমন কিছু ঘটেনি, যার মধ্যে আশা করার মতো কিছু আছে। হাসিনা যেমন লাঠিপেটা করতো, এরাও তাই করছে। হাসিনা পালিয়েছে কিন্তু শাসক শ্রেণির অভ্যাস পরিবর্তন হয়নি।’
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যে শক্তি ক্ষমতায় এসেছে তাদের প্রগতিশীল বলা যায় না- বলেও মন্তব্য করেন বদরুদ্দিন উমর।
তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে দেশের রাজনীতিতে এখন দক্ষিনপন্থীদের প্রবল প্রাধান্য, ধর্মীয় প্রভাব বেড়েছে। এতে জামায়াতে ইসলামী শক্তিশালী হয়েছে। ছাত্রদের দলও একই ধারায় কথা বলছে। একটা দল গঠন করে পাঁচতারকা হোটেলে ইফতার পার্টি, ধর্মীয় বয়ান দিয়ে জামায়াতের সঙ্গে পথ চলছে তারা।’
মূলত এ কারণেই জুলাই আন্দোলনের শুরুতে বামপন্থীরা সবাই যুক্ত হতে চাইলেও তারা সঙ্গে নেয়নি বলে মনে করেন বদরুদ্দিন উমর।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, কেন্দ্রীয় নেতা সজীব রায়, ভুলন ভৌমিক প্রমুখ।