অবৈধ অস্ত্র দেখলেই পুলিশকে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘খবর দিলে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে। খবরদাতাকে পুরস্কৃত করা হবে এবং তার পরিচয়ও গোপন রাখা হবে।’
শনিবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনাপাড়ের আলোচিত গুয়াগাছিয়া পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি কোস্টগার্ডের টহলও বাড়ানো হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘স্থানীয়দের প্রাণের দাবিতে অস্থায়ীভাবে এই ক্যাম্প চালু করা হয়েছে। আশা করি এটি স্থায়ী ফাঁড়িতে রূপ নেবে।’
দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশে নানা ধরনের সমস্যা আছে। তবুও আমাদের কাজ করে যেতে হবে। সবাই তাদের নিজস্ব স্বার্থ হাসিল করতে চাইবে, কিন্তু সরকারের চেষ্টা থাকবে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা।’
নয়ন ও পিয়াশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা দেশে নেই বলে শোনা যাচ্ছে। তবে দেশে ফিরলে কেরানীগঞ্জ জেল ছাড়া তাদের আর কোথাও স্থান হবে না। এ এলাকায় তাদের কোনো স্থান নেই।’
‘ফাঁড়ি স্থায়ী করার জন্য প্রস্তাব ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আল্লাহর কৃপায় এটি স্থায়ী ফাঁড়ি হিসেবে অনুমোদন পাবে’, যোগ করেন তিনি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক রেজাউল করিম মল্লিক, মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য প্রতিনিধি।
গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে গত ২২ আগস্ট স্থাপন করা হয় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প। বহু বছর ধরে মেঘনা ও গোমতী নদীবেষ্টিত এ ইউনিয়নের জামালপুর ও শিমুলিয়া গ্রামে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস ও তাদের সহযোগীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।
অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি, মারামারি ও অন্যান্য অভিযোগে নয়ন সরকারের বিরুদ্ধে ২৯টি এবং তার চাচাতো ভাই পিয়াস সরকারের বিরুদ্ধে ২৪টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের কারণে বালু মহাল নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, হামলা ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে দীর্ঘদিন।
গত ২৮ জুলাই বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গিয়ে গুলিতে নিহত হন সন্ত্রাসী আবদুল মান্নান ও হৃদয় বাঘ। পরে এ ঘটনায় পুলিশ ক্যাম্প চালু হয়। ২৩ আগস্ট নয়ন-পিয়াসের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন জামালপুর গ্রামের নারী-পুরুষ। এরপর পুলিশের ক্যাম্পে ডাকাতদের হামলার ঘটনাও ঘটে।