উপজেলা পর্যায়ে আদালত বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনাসহ সবাই একমত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘অধস্তন আদালত বিকেন্দ্রীকরণে একটি জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে।’
সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের বৈঠকের দ্বিতীয় পর্যায়ের দশম দিনের শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
অধস্তন আদালতের ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিষয় সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যেমন, জেলা সদরে অবস্থিত উপজেলায় আদালত প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন নেই। যেহেতু, সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা সদর উপজেলা আদালত জেলা সদরে জেলা জজকোর্টের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া যায়, তাতে জেলা সদরে উপজেলা আদালত প্রতিষ্ঠা হয়ে যায়।‘
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে—যেগুলো ব্রিটিশ আমালের চৌকি হিসেবে চিহ্নিত ছিল—সেগুলো, দ্বীপাঞ্চল ও কিছু কিছু উপজেলায় আদালত প্রতিষ্ঠিত আছে। সেই সংখ্যাটা ৬৭, যেটা আমরা পরিসংখ্যানে পেয়েছি। কম-বেশিও হতে পারে। এগুলো প্রতিষ্ঠিত থাকবে। তবে সেখানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা নির্মাণ করা প্রয়োজন।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যেসব উপজেলা জেলা সদরের খুব কাছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা যেহেতু আগের তুলনায় উন্নত হয়েছে, সে জন্য কোনো উপজেলা সদর উপজেলা হেডকোয়ার্টার্সের ১৫ বা ২০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকলে সরকারিভাবে আরেকটি স্থাপনা নির্মাণ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাস ও তা রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই ঝামেলাপূর্ণ ব্যাপার। সেই বিবেচনায় একটি বিস্তারিত জরিপ পরিচালনা শেষে সেসব উপজেলা সদর বা হেডকোয়ার্টার্সে আদালত স্থাপনের প্রয়োজন নেই বলে মতামত দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলার দূরত্ব, জনঘনত্ব ও অর্থনৈতিক অবস্থা, যোগাযোগ, কোন কোন উপজেলায় কত মামলা আছে ও অন্যান্য বিষয়াবলি বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। এরপর একটি জরিপ কার্যক্রম করে পর্যায়ক্রমে সমস্ত উপজেলায় আদালত স্থাপনে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।’
বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিগত দিনে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থাপনের বিষয়ে যে আলাপ হয়েছিল, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সেই একই বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। আমরা বলেছি, হাইকোর্টে স্থায়ী বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থাপনের বিষয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।’
এর আগে উপজেলা পর্যায়ে আদালত প্রতিষ্ঠা করা হলেও তা তুলে দেওয়া হয়েছে, এখন সেটা আবার পুনর্প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১৯৯১ সালে বিএনপির নেতৃত্বে সরকার প্রতিষ্ঠা করা হলে তখনকার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও জাতীয় সেন্টিমেন্টের সঙ্গে একমত হয়ে উপজেলা পর্যায়ের আদালত কিছুটা ব্যতিক্রম ছাড়া তুলে দেওয়ার বিষয়ে সবাই একমত হয়। সেই বিষয়ে তখন কোনো আপত্তি জাতীয়ভাবে আসেনি।’
তবে বর্তমানে যে ৬৭টি আদালত আছে, সেটাও তখনকার সিদ্ধান্ত। এটা তখনকার অবস্থা। কিন্তু তার ৩৫ বছর পরে সময়ের প্রয়োজনে সেই বিবেচনা পাল্টাতে হয়েছে, যোগ করেন তিনি।