খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। এক মাস আগেই মাঠের পারফরম্যান্সে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলটা ছিল এলোমেলোর চূড়ান্ত। সহযোগী সদস্য দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ হার, পাকিস্তান সফরে গিয়ে ৩-০’তে হোয়াইটওয়াশ। সেই হতাশা অবশ্য লিটন দাসরা ভুলিয়েছেন শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে। ট্রফি নিয়ে দেশে ফেরার দুদিন পরই আবার মাঠে নেমে যেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
রবিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ এসেছে দলীয় অনুশীলনে। অনুশীলনের আগে ছিল সংবাদ সম্মেলন। এর আগে অধিনায়ক লিটন প্রায় মিনিট দশেক খুঁটিয়ে দেখেছেন মিরপুরের উইকেট। কারণ এই মাঠে কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্ট মানেই উইকেট নিয়ে বাড়তি আগ্রহ। তবে উইকেট নিয়ে খানিকটা চিন্তা থাকলেও লিটন আশা করছেন ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে এই সিরিজ জমিয়ে তুলতে পারবেন তারা। যদিও দুই দলের সর্বশেষ দেখায় পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ দল।
সেই সিরিজের পর শ্রীলংকা সফরে টি-টোয়েন্টি জেতায় অবশ্য লিটন আশা করছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ভালো ক্রিকেটটা তার খেলতে পারবেন। লিটন বলেন, ‘পাকিস্তানে যখন খেলতে যাই, একই চিন্তাধারা ছিল যে জেতার জন্য খেলব। দুর্ভাগ্যবশত জিততে পারিনি। কিছু ভুল করেছি, তাই ফল আনতে পারিনি। তবে শ্রীলঙ্কা সিরিজে প্রথম ম্যাচ হারার পর ভালোভাবে কামব্যাক করেছি। অবশ্যই আমাদের প্রতিটি খেলোয়াড়ের ভেতরে আত্মবিশ্বাস জন্মেছে। তবে একইসঙ্গে এখন ভিন্ন কন্ডিশন, ভিন্ন দল। তাই পার্টিকুলারলি ওই দিনে ওইভাবেই ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। আত্মবিশ্বাসটা আপনাকে সাহায্য করবে। একই সময়ে অবস্থানটা ধরে রাখার জন্য আপনার মনোযোগটা কেমন আছে, সেটাও অনেক বেশি জরুরি হবে সামনের ম্যাচের জন্য।’
মিরপুরের উইকেট সাধারণত স্পিনারদেরই সাহায্য করে থাকে। কালো মাটির উইকেট হওয়াতে ভাঙন ধরে দেরিতে, নিয়মিত দেখা যায় লো বাউন্স। অবশ্য সর্বশেষ বিপিএলের রেকর্ড ঘাঁটলে দেখা যায়, ফ্লাডলাইটের নিচে হওয়া ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দল গড়ে ১৫০-এর মতো রান করেছে। তবে এই মাঠের শেষ পাঁচ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির রেকর্ড বলছে রাতের ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের গড় রান ১২৫ থেকে ১৩০।
উইকেটের আলোচনায় দুই পর্যায়ের ক্রিকেটে পার্থক্যটা লিটন ধরিয়ে দিলেন নিজেই। বিপিএল আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বোলারদের যে ফারাক, সেটাই রান কমবেশি হওয়ার মূল কারণ হিসেবে মনে করেন এই ডানহাতি ব্যাটার। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘এখানে দুইটা ফ্যাক্ট, যেটা আমার কাছে মনে হয় নিজের অভিজ্ঞতা থেকে। আমরা যখন বিপিএলটা খেলি, তখন একটা ইনিংসে ডিউ পড়ার চান্স বেশি থাকে। তখন ব্যাটিং করাটা ইজি হয়।’
উইকেটে হালকা ঘাসের ছোঁয়া থাকলেও জানা গেছে, স্পিনিং ট্র্যাকেই হতে পারে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ। লিটনও তাই বাস্তবতা মেনে বলেছেন, হাই স্কোরিং না হলেও ম্যাচের লড়াই জমবে। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘বিপিএলে আমার মনে হয় না, প্রত্যেকটা দলে পাঁচটা কোয়ালিটি বোলার থাকে। এসব কারণে দুই-একটা বোলারকে ইউটিলাইজ করলে রানটা বেড়ে যায়। কিন্তু ন্যাশনাল টিম আলাদা জায়গা। প্রত্যেকটা দলে পাঁচ-ছয়টা কোয়ালিটি বোলার থাকে। আমার মনে হয় হাই স্কোরিং না হলেও খেলাটা জমবে। দুই সাইডেই সমান সুযোগ থাকবে।’