রিজওয়ানার জেনেভা সফরের পরই রাষ্ট্রপতির ছবি অপসারণ

টাইমস রিপোর্ট
2 Min Read
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (বামে ) ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশি মিশনগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি অপসারণের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্রের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতির ছবি আকস্মিকভাবে অপসারণ করা হয়নি। সম্প্রতি পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জেনেভা সফরের সঙ্গে এই ছবি অপসারণের বিষয়টি সম্পর্কিত।

গত সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে গেলে রিজওয়ানা লক্ষ্য করেন, রাষ্ট্রপতির ছবি এখনো জেনেভা মিশনে ঝুলছে। আগে থেকেই ছবি নামানোর মৌখিক নির্দেশনা দেওয়ার পরেও ছবি দেখে অবাক হন উপদেষ্টা। তিনি (উপদেষ্টা) আবার তাদের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন। মিশন কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা সুস্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেননি। পরে ছবিটি সরিয়ে ফেলা হয়।

এ ঘটনা জানাজানি হলে একই পথ অবলম্বন করে অন্যান্য মিশনগুলো। তারাও একইভাবে রাষ্ট্রপতির ছবি অপসারণ করতে শুরু করে। পরবর্তীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি নতুন নির্দেশনা জারি করে এবং অধিকাংশ মিশন তা দ্রুত অনুসরণ করে।

২০২৪ সালের আগস্টে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর অফিসগুলোতে কারো প্রদর্শন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যার আওতায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্যদের ছবি অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়। ফলে দ্রুত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সরকারি অফিসগুলো থেকে অপসারণ করা হয়। আর এই নীতির আওতায় বিদেশি মিশনগুলো থেকে সরানো শুরু হয় রাষ্ট্রপতির ছবি।

অন্তর্বর্তী সরকারের এই নীতি প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের ছবির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, অর্থাৎ কোনো সরকারি অফিসে তার ছবিও প্রদর্শনের রীতি থাকবে না।

গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বাবা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরকারি অফিসগুলো থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। এর আগে শেখ হাসিনার শাসনামলে শেখ মুজিবের ছবি সরকারি অফিসগুলোতে রাখার ক্ষেত্রে ছিল সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। আর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রদর্শন ছিল ঐতিহ্য। তবে দেশে নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর এই ঐহিত্যের অবসান ঘটে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইউনূসের প্রেস উইং ও বিদেশি মিশনগুলো কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে তারা নিশ্চিত করেছে, মন্ত্রণালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় রাষ্ট্রপতির ছবি, যা রোববার দুপুর পর্যন্ত ঝুলছিল, রাতের দিকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

অন্যদিকে, কিছু অফিসে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ছবি এখনো প্রদর্শিত হচ্ছে, যা নতুন নীতিমালার পরিপন্থী।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *