রাতেও জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান, আন্দোলন চালানোর ঘোষণা

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
বুধবার রাতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বক্তব্য দেওয়ার সময় তার দিকে পানির বোতল ছুঁড়ে মারা হয়। ছবি: ভিডিও ক্লিপ থেকে নেওয়া
Highlights
  • ‘তথ্য উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট অবস্থান দেয়নি। বরং এটি আরও বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। আমরা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো পরিষ্কার সরকারি ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা এই জায়গা ছাড়ছি না।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় নিয়ে বুধবার রাজধানীর ‘যমুনা’র সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মধ্য রাতেও সেখানে অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা। শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ কাকরাইল মোড়ে বৃহস্পতিবার রাতেও অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এদিকে, রাত ১০টার পরে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ‘যমুনা’ চত্বরে এসে শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তব্য রাখেন। তিনি জানান, ‘প্রধান উপদেষ্টা খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করবেন। শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির বিষয়েও আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক সমাধানের চেষ্টা চলবে।’

‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচিতে কাকরাইল মোড়ে বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ছবি: ফোকাস বাংলা

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার সবসময় যুক্তিসঙ্গত দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা শুনতে প্রস্তুত।’

তবে তার বক্তব্য শুরু হতেই বিক্ষোভকারীদের ভিড় থেকে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়া হয়। উত্তেজনাকর পরিবেশে বক্তব্য চলাকালে হঠাৎ করে একদল বিক্ষোভকারী তার দিকে পানির বোতল ছুড়ে মারলে তা সরাসরি উপদেষ্টার মাথায় গিয়ে লাগে। আঘাত পেয়ে তিনি তৎক্ষণাৎ বক্তব্য বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

পরে প্রায় ১৫ মিনিট পর অবস্থানস্থল থেকে কিছুটা দূরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি চক্র ঢুকে অন্তর্ঘাতের চেষ্টা করছে। যারা আমার ওপর হামলা করেছে, তারা প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা নয়।’ তার এই মন্তব্য নতুন করে বিতর্কের জন্ম দেয় আন্দোলনকারীদের মধ্যে।

রাত ১২টার পরে আন্দোলনকারীদের পক্ষে বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন।

তিনি তথ্য উপদেষ্টার ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা সহিংসতার পক্ষে নই। তবে এ ঘটনার দায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নেবে না।’

তিনি দাবি করেন, ‘ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন এবং আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হতে পারে।’

শামসুল আরেফিন বলেন, ‘তথ্য উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট অবস্থান দেয়নি। বরং এটি আরও বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। আমরা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো পরিষ্কার সরকারি ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা এই জায়গা ছাড়ছি না।’

এর আগে, বুধবার আবাসন ভাতাসহ তিন দফা দাবিতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’ অভিমুখে যাত্রার সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জল-কামান নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশের লাঠিপেটায় অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আহতদের মধ্যে ২৫ জন শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

এদিন বেলা পৌনে ১২টার দিকে পূর্বঘোষিত ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি অনুযায়ী সেগুনবাগিচার কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে শিক্ষার্থী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা পিছু হটলেও পরে আবার তারা সেখানে জড়ো হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে জবির বেশ কয়েকজন শিক্ষকও রয়েছেন সেখানে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *