যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা থেকে ‘ইতিবাচক ফল’ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৪টি দেশের আমদানি পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর মঙ্গলবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘চূড়ান্ত শুল্কহার নির্ধারিত হবে ইউএসটিআরের (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি) সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে। এ কারণেই আমাদের তাদের (ইউএসটিআর) সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। এখনও শুল্কহার চূড়ান্ত হয়নি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী মঙ্গলবারই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আলোচনা দুর্বল হতে পারে—এমন শঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনামের বাণিজ্য ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১২৫ বিলিয়ন ডলার, আর আমাদের মাত্র ৫ বিলিয়ন। এজন্য ভিয়েতনাম বেশি ছাড় পেয়েছে শুল্ক হারে।’
তিনি জানান, বাণিজ্য উপদেষ্টা ইতোমধ্যে ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন এবং তিন দিন আগে যাওয়ার পর থেকেই তিনি এ বিষয়ে কাজ করছেন। ৮ জুলাইয়ের বৈঠকের পর বিষয়টি বোঝা যাবে, যা বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী বুধবার ৯ জুলাই ভোরে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ফলাফল যাই হোক, সরকার তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। এ পর্যন্ত আমাদের যেসব বৈঠক হয়েছে, সবই ইতিবাচক।‘
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মঙ্গলবার ভোরে (বাংলাদেশ সময়) তার ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক চিঠিতে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন—যা তিন মাস আগে প্রস্তাবিত ৩৭ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ কম।
তবে এটি এখনো ভিয়েতনামের নতুন ২০ শতাংশ শুল্কহারের তুলনায় অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ভিয়েতনাম তাদের দেশে আমদানি হওয়া সব মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ট্রাম্পের পাঠানো চিঠিগুলোতে ১৪টি দেশের নেতাদের উদ্দেশ্যে আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্কহার কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।
বাংলাদেশ ছাড়াও নতুন শুল্কহার আরোপ হয়েছে—মিয়ানমার ও লাওসের জন্য ৪০ শতাংশ, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের জন্য ৩৬ শতাংশ, সার্বিয়ার জন্য ৩৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার জন্য ৩২ শতাংশ, এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কাজাখস্তান, মালয়েশিয়া ও তিউনিসিয়ার জন্য ২৫ শতাংশ।
চিঠিগুলোতে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ‘কোনো দেশ পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তাদের আমদানি শুল্ক বাড়ালে, তার প্রশাসন আরও বেশি হারে শুল্ক আরোপ করবে।’