যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল টেক্সাসে একটি গ্রীষ্মকালীন শিবির ও কয়েকটি বাড়িঘর ভেসে যাওয়ার পর অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে একটি শিবিরের ২৫ মেয়ে নিখোঁজ রয়েছেন।
শুক্রবার ভোরে শুরু হওয়া বন্যায় এ নিহত ও নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। উদ্ধারকর্মীরা সারা রাত ধরে তল্লাশি চালিয়েছেন। শনিবার সকালেও কিছু এলাকায় বন্যা অব্যাহত ছিল।
নিখোঁজ মেয়েরা কের কাউন্টির হান্টের কাছে গুয়াদালুপ নদীর ধারে অবস্থিত ক্যাম্প মিস্টিকে ছিলেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার শেরিফ।
এ দুর্ঘটনার পর বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানের ছবি অনলাইনে পোস্ট করে তথ্য খুঁজছিলেন। কেউ কেউ আবার পুনর্মিলন কেন্দ্রগুলোতে ছুটে গেছেন প্রিয়জনদের খোঁজে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বিপর্যয়কে ‘ভয়াবহ’ এবং বন্যাকে ‘বিস্ময়কর’ বলে অভিহিত করেছেন। টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বলেছেন, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে ও তিনি সরাইকে প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন।
কের কাউন্টির এক আপডেটে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাতে এখনো অনেক সংখ্যক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। শেরিফ ল্যারি লেইথা এই তথ্য জানিয়েছেন।
সেন্ট্রাল টেক্সাসের এই ভয়াবহ আবহাওয়ার কারণে হাজার হাজার মানুষের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বারনেট কাউন্টিতে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ ছিল না বলে জানা গেছে।
কের কাউন্টিতে এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭০০। কেরভিল পাবলিক ইউটিলিটি বোর্ড ফেসবুকে জানিয়েছে, কর্মীরা ‘অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে’ কাজ করায় কয়েক দিন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হতে সময় লাগতে পারে।
শুক্রবার প্রাণঘাতী বন্যা সৃষ্টিকারী বিপজ্জনক আবহাওয়া শনিবার এবং সম্ভবত পুরো সপ্তাহজুড়ে টেক্সাসের সেন্ট্রাল অঞ্চলে বিরাজ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস পূর্বাভাসে জানিয়েছে, শনিবার অঞ্চলে ২ থেকে ৫ ইঞ্চি বৃষ্টি হতে পারে, আর কিছু জায়গায় যেখানে ইতোমধ্যেই ধ্বংসাত্মক বন্যা হয়েছে সেখানে ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে।
শনিবার কোথায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হবে, সেটি সঠিকভাবে নির্ধারণ করা কঠিন হলেও, সান আন্তোনিও এবং অস্টিনের পূর্বাঞ্চলে এর সম্ভাবনা বেশি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। শুক্রবার সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা এই দুই শহরের পশ্চিমে হয়েছিল, এবং শনিবার সেখানে আরও ২ থেকে ৪ ইঞ্চি বৃষ্টি হতে পারে।
বারনেট কাউন্টির বড় অংশ এবং উইলিয়ামসন ও ট্র্যাভিস কাউন্টির পশ্চিম অংশে ফ্ল্যাশ ফ্লাড জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেসব এলাকার মানুষকে অবিলম্বে উঁচু জায়গায় চলে যেতে বলা হয়েছে, এটিকে ‘জীবন-হানিকর পরিস্থিতি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এছাড়া, এই অঞ্চলের জন্য শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বন্যা সতর্কতা বলবৎ রয়েছে, যা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রোববার পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।