মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলা মানেই উইকেট নিয়ে নানান জল্পনা-কল্পনা। কেমন হবে উইকেট, আচরণ কী হবে; সেসব নিয়ে খেলা শুরুর আগ পর্যন্ত চলে আলোচনা। শনিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগের দিন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাসও বলেছিলেন, দশ বছর ধরে এখানে খেলার পরেও তারা মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। লিটনরা যেখানে এখনো মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন, বিদেশি কোনো দল এসে রাতারাতি সাফল্য পেয়ে যাবে; এই ভাবনাটা ভাবতে পারাও একটু কঠিন।
রোববার পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়ে জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তিন বল বাকি থাকতে মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। এই ব্যাটিং ধসের নেপথ্যে পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন সরাসরি দোষ দিলেন মিরপুরের উইকেটের। সংবাদ সম্মেলনের পুরোটা জুড়েই সমালোচনা করেছেন উইকেটের। সরাসরিই বলেছেন, এই ধরনের উইকেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
পাকিস্তান ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগলেও বাংলাদেশের ব্যাটাররা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যাট করেছেন। এছাড়া ম্যাচের শুরুর দিকে বেশ ভালো বাউন্সও দেখা গেছে উইকেটে। পেসাররা শুরুর সুইং-মুভমেন্ট বেশ ভালোই কাজে লাগিয়েছেন। তবুও সংবাদ সম্মেলনে দল পাকিস্তান দলের কোচ বললেন, এই উইকেটে টি-টোয়েন্টি সূলভ ছিল না, ‘আমার মনে হয় না এই উইকেট টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের জন্য আদর্শ। দলগুলো যেখানে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেখানে এমন উইকেট একেবারেই গ্রহনযোগ্য নয়। ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য উইকেটকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাচ্ছি না। কিন্তু এই উইকেটটা আন্তর্জাতিক মানের নয়।’
তবে পারভেজ ইমন বলছেন, উইকেটে বেশ ভালো বাউন্স ছিল। তার মতে পাকিস্তান মানিয়ে না নিতে পারাতেই এই ব্যর্থতার মুখে পড়েছে তারা। হেসনের এই মন্ত্যব্যের জবাবে ইমন বলেন, ‘এমন কিছু মনে হয়নি। আমরা ১১০ রান করছি ১৬ ওভারে। আমরা যদি ২০ ওভারও খেলতাম ১৬০ রান করতে পারতাম। তো আমার কাছে এমন কিছু মনে হয়নি। হতে পারে ওরা মানিয়ে নিতে পারিনি, আমরা মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছি।’
মিরপুরে সাধারণত যেসব টার্ন-লো বাউন্সের দেখা মেলে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে সেসব অনুপস্থিতই ছিল। স্পিনারদের চেয়ে পেসাররাই বেশি দাপুটে ছিলেন। ব্যাটারদের জন্যও কিছু না কিছু ছিল উইকেটে। পারভেজ ইমনের ৫৬* রানের ঝড়ো ইনিংসটাই এর সাক্ষী। তবে হেসন মনে করছেন, এসব উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা বিদেশের মাটিতে তাদের কাজে আসবে না।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা কঠিন উল্লেখ করে পাকিস্তানের এই কিউই কোচ বলেন, ‘এই ধরনের উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে কোনো সাহায্য করবে বলে মনে হয় না। কিন্তু এমন উইকেটে প্রথমে ব্যাট করা চ্যালেঞ্জিং। কারণ আপনি জানেন না, ১০০, ১৩০ নাকি ১৫০ রান আপনার জন্য যথেষ্ট। এই উইকেটটা কারো জন্যই ভালো না। অবশ্য যেকোনো উইকেটেই আমাদের ভালো খেলার সামর্থ্য রাখতে হবে।’