২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পাস হচ্ছে আজ। এই বাজেট ১ জুলাই থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য কার্যকর হবে। তার আগে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন ও রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি হবে।
রোববার বেলা ১০টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন করা হবে নতুন বাজেট। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপত্বি করবেন। উপদেষ্টারা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।
দেশে বর্তমানে জাতীয় সংসদ কার্যকর না থাকায় এই প্রক্রিয়ায় বাজেট অনুমোদন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
গত ২ জুন বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়’ শীর্ষক অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। নতুন বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৬) মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে সংকোচনমূলক বাজেট।
সূত্র জানিয়েছে, এ বছর বাজেটে আবাসন খাতে থাকছে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ। তবে তা ‘কালো টাকা’ নামে নয় ‘অপ্রদর্শিত অর্থ’ নামে। বাজেট ঘোষণার পর ব্যাপক সামলোচনার প্রেক্ষিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, এ বছর সংসদ কার্যকর না থাকায় সরকার সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে বাজেটের বিষয়ে মতামত গ্রহণ করে। ১৯ জুন পর্যন্ত অনলাইনে এই মতামত গ্রহণ করা হয়। যার সমন্বিত প্রতিবেদন রোববারের বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
সূত্র জানায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সুদ পরিশোধে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নতুন অর্থবছরে বেতন, ভাতা ও ভর্তুকির মতো খরচ চলতি অর্থবছরের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে রাখা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা তার বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, ঋণের সুদ পরিশোধ করতে খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় বাজেটের আকার ছোট করতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
আগামী বছরের জন্য সরকার প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি পূরণে নতুন বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এটি ছিল জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এটি বলবৎ থাকছে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। চলতি অর্থবছরেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।