ঢাকা ফিরতি মানুষের চাপ বেড়েছে, নেই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা

টাইমস রিপোর্ট
4 Min Read
ঈদ উদযাপন শেষে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঢাকা ফেরা মানুষের ভিড়। ছবি: বায়েজীদ আকতার/টাইমস
Highlights
  • রাজধানীর অন্যতম প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ী-সায়দাবাদ,গাবতলী ও মহাখালী বাসটার্মিনালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা ফিরতি যাত্রীর চাপ অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশ বেড়েছে।

পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন শেষে রাজধানীতে ধাপে ধাপে ফিরছে মানুষ। এ বছর সরকার ঘোষিত ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় অনেকেরই ঢাকা ফেরায় নেই তাড়াহুড়ো। ফলে এবার ঈদের ফিরতি যাত্রা তুলনামূলক স্বস্তির হচ্ছে।

ঈদের ছুটি শেষে অফিস শুরু হচ্ছে রোববার। সে লক্ষ্যে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা থেকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকায় ফিরছে মানুষ।

শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর অন্যতম প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ী-সায়দাবাদ,গাবতলী ও মহাখালী বাসটার্মিনালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা ফিরতি যাত্রীর চাপ অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশ বেড়েছে।

সকাল থেকেই ফেরি ও লঞ্চে যাত্রীদের ভিড় অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেড়েছে বলে জানা গেছে।

বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে করে রাজবাড়ির দৌলতদিয়া ফেরিঘাট হয়ে পাটুরিয়াঘাটে আসছেন যাত্রীরা। সবচেয়ে বেশি আসছেন মোটরসাইকেলের যাত্রী। লঞ্চঘাটও যাত্রীতে ভরপুর।

তবে সড়কে কিংবা ফেরিঘাটে কোন ধরনের ভোগান্তি না থাকায় নিরাপদ ও স্বস্তিতে পারাপার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যাত্রী পারাপারে বর্তমানে ১৫টি ফেরি ও ১৮টি লঞ্চ চলাচল করছে।

আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটেও যাত্রীর চাপ বেড়েছে।  জানা গেছে, পাবনার কাজিরহাট থেকে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে করে আরিচাঘাটে আসছেন যাত্রীরা।

সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে দেখা গেছে, বরিশাল,পটুয়াখালী ও ভোলা থেকে ঢাকা ফিরছে সাধারণ মানুষ ও কর্মজীবীরা। অতিরিক্ত ভিড় না থাকলেও অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন মানুষের চাপ অনেকটা বেড়েছে।

এ বছর ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে ৭ জুন। ছয় দিনের মাথায় কর্মস্থলমুখী মানুষের চাপ এখনো কম। ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় গ্রামে ফেরা মানুষের রাজধানীতে কর্মস্থলে ফিরতে কিছুটা দেরি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে ঢাকা এখনো তুলনামূলক ফাঁকা। আগামী সপ্তাহে ঢাকাও ফিরবে তার চিরচেনা রূপে।

ইতোমধ্যে বেসরকারি কর্মজীবীরা ফিরলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি, শিক্ষার্থী ও সরকারি কর্মজীবীদের হাতে এখনো কিছুটা সময় থাকায় ধীরে ধীরে রাজধানীতে ফিরছে তারা।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদে এবার লম্বা ছুটি। খুব জরুরি না হলে লোকজন এখনো সেভাবে ঢাকা ফিরছে না। মূলত সরকারি অফিস খুলছে রোববার। ফলে, ঢাকা ফেরা মানুষের চাপও কম ছিল।

এ ছাড়া কলকারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি শুরু হচ্ছে আগামী সপ্তাহ থেকে। শুক্র ও শনিবার ঢাকা ফিরতি মানুষের চাপ বেশি থাকবে বলেও জানান তারা।

সায়েদাবাদ এলাকায় দেখা গেছে, এদিন যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেশি। যাত্রীরা স্বস্তিতেই ঢাকা ফিরছেন। শুক্রবার ও শনিবার ঢাকা ফিরতি মানুষের চাপ বাড়বে। একই সঙ্গে ঢাকাও ফিরবে তার চিরচেনা রূপে। যাত্রীরা জানান, স্বস্তিতেই তারা ফিরতে পেরেছেন। সড়কেও ছিল না ভোগান্তি।

ঈদ উদযাপন শেষে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকা ফেরা মানুষের ভিড়। ছবি: বায়েজীদ আকতার/টাইমস

মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি
সম্প্রতি দেশে আবার করোনা বাড়ছে। সরকারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্ত কোথাও তেমন করে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বাস ও লঞ্চ টামির্নাল যেসব যাত্রীরা ফিরছে, তাদের দুয়েকজন ছাড়া কেউই মাস্ক পরছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যাত্রীরা এ ব্যাপরে উদাসীন।

ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেশেও এর নতুন উপধরনে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। এটি ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বুধবার দুপুরে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর ১১ দফা নির্দেশনা পড়ে শোনান।

আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার রোধে দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরের আইএইচআর ডেস্কগুলোয় নজরদারি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়গুলো জোরদার করার বিষয়ে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *