বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুরে নিহত আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ।
সূচনা বক্তব্যের পর আবু সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে দেখানো হয়।
ছেলেকে গুলির দৃশ্য দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। তাকে বার বার চোখ মুছতে দেখা যায়।
পরে প্রসিকিউসনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার মামলায় প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করে দেয় ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ৩০ জুলাই প্রসিকিউসনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর এই মামলায় অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করেছিলেন। এরপর ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
এই মামলার যে ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার ছয় জন আজ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
এরা হলেন-বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক সাবেক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৩০ জুন ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
গত বছর সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।
২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে, সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
কোটা সংস্কারের দাবির এই আন্দোলকে যে কয়েকটি ঘটনা গতি দিয়েছিল, তার অন্যতম হলো আবু সাঈদ হত্যা।