১৮ কোটি মানুষ আ. লীগকে চায় না: ফখরুল

টাইমস রিপোর্ট
4 Min Read
চট্টগ্রামের সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: বাসস

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে যারা এখন মাঠে আছে কেবল তারা নয়, দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না।

সংবাদ সংস্থা বাসস জানায়, শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপির তিন সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠন চট্টগ্রামে এ সমাবেশের আয়োজন করে। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলা ও ৯৯ উপজেলার নেতাকর্মীরা পলোগ্রাউন্ড মাঠের এ সমাবেশে অংশ নেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা কঠিন ও অস্বাভাবিক সময় অতিবাহিত করছি। কারণ শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, তাদের প্রেতাত্মারা এখনো আছে। বাংলাদেশে তাদের রাজত্ব কায়েম করার জন্য তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না।’

‘দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা যাদের দায়িত্ব দিয়েছি দেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে নেওয়ার জন্য, তারা সঠিকভাবে এখনো কাজটি করতে পারছে না। ফলে মাঝে মাঝেই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, তাদের (ষড়যন্ত্রকারীদের) আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।’

তিনি আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনামলে দেশে ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, প্রায় ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৭০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট শাসকগোষ্ঠীই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ছয় বছর কারারুদ্ধ করে রেখেছিল এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরতে দেয়নি। এই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার অবসান তরুণদের গণআন্দোলনের কারণেই সম্ভব হয়েছে।’

তরুণদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মাথা ঠান্ডা রেখে, সজাগ দৃষ্টিতে সব চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিতে হবে। আমরা সত্যিকার অর্থে একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানে বাংলাদেশের পতাকা বিশ্বজুড়ে সম্মানের সাথে উড়বে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু হয়েছে, এটা কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। গণতন্ত্রের পথ কেউ যাতে রুদ্ধ করতে না পারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে এগিয়ে যাবো, কারো উস্কানিতে পা দেওয়া যাবে না। এটা তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত। আমরা রাজনীতিতে নতুন সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে চাই, সহনশীল থাকতে হবে সবাইকে।’

এর আগে সমাবেশে উপস্থিত হয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমি পলিটিক্যাল কেউ না। আমি একজন স্পোর্টসম্যান। তাই আমি স্পোর্টস নিয়ে কিছু কথা বলবো। একসময় চট্টগ্রাম থেকে ৫-৬ জন করে ন্যাশনাল টিমে প্রডিউস করতো। কিন্তু লাস্ট ১০-১৫ বছরে সেরকম প্লেয়ার উঠে আসেনি। আমি চাইবো, আগামীতে যেন উঠে আসে। কার জন্য কি প্রতিবন্ধকতা হয়েছে তা নয়। আমরা কেন ন্যাশনাল টিমে যেতে পারিনি তা দেখতে হবে।’

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাৎ হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য ড. মাহাদী আমীন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান নাজিম, সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *