যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পার্লামেন্ট রোববার হরমুজ প্রণালি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইরানের নিয়ন্ত্রণাধীন এই জলপথ দিয়ে বিশ্বব্যাপী মোট তেল ও গ্যাস চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ পরিবহন করা হয়।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এতে বিশ্বব্যাপী তেল ও তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দামে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
বাংলাদেশেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এমনকি ঘুরে দাঁড়াতে থাকা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
জেপি মর্গান আগেই পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে, যদি মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত ও হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়, তাহলে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।
১৩ জুন ইসরায়েল-ইরান সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম বেড়ে ৭৩ থেকে ৭৭ ডলার ব্যারেল হয়েছে। পরবর্তী বাজার খোলার সময় এর দাম আরও ৩ থেকে ৫ ডলার বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক ট্রেডিং কোম্পানিগুলোর বিশ্লেষকরা।
মো. মনিরুজ্জামান, যিনি একজন চার্টার্ড ফিনান্সিয়াল অ্যানালিস্ট ও প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের প্রধান, টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘হরমুজ প্রণালি বন্ধ হওয়া বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য যেমন খারাপ খবর, বাংলাদেশের জন্যও তেমনি।’
জেপি মর্গানের পূর্বাভাস অনুযায়ী, হরমুজ বন্ধের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি ৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। ফলে সুদের হার বাড়বে এবং ভোক্তা ব্যয় কমবে, যা বাংলাদেশের জন্য অশুভ সংকেত।
মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ‘বিশ্ব দীর্ঘমেয়াদে ১০০ ডলারের ওপরে তেলের দাম সহ্য করতে পারবে না। তাই কূটনৈতিকভাবে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করবে—এটাই এখন একমাত্র আশা।’
শুধু তেল নয়, এলএনজি সরবরাহেও ধাক্কা লাগলে দেশে গ্যাস সংকট আরও তীব্র হতে পারে। ফলে শিল্প উৎপাদনেও বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটবে।