সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহ ও জনগণের ভোট ছাড়া প্রহসনের নির্বাচন সম্পন্ন করার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
দুই দফায় আট দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার।
আসামি নূরুল হুদা দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তা রেকর্ড করার জন্য আদালতে আবেদন করেন।
ঢাকার অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
নুরুল হুদার আইনজীবি তৌহিদুল ইসলাম সজিব স্বীকারোক্তির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আসামিকে রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে আমরা তার জামিনের দরখাস্ত নিয়ে আদালতে উপস্থিত হই। এরপর জানতে পারি, তিনি দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিচ্ছেন।’
গত ২২ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে নুরুল হুদার বাড়িতে গিয়ে ‘স্থানীয় জনতা’ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় পরদিন তাকে চার দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এরপর ২৭ জুন ফের চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এর আগে গত ২২ জুন দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা তিন সিইসি যথাক্রমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে শেরেবাংলানগর থানায় মামলা হয়। মামলাটি করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
সাবেক সচিব নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন দেশের দ্বাদশ সিইসি। তার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট হয়। এসব নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ও ফলাফল কারচুপির বিস্তর অভিযোগ ছিল।