থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে দেশটির সাংবিধানিক আদালত। মঙ্গলবার নয় সদস্যের বেঞ্চের সাতজন বিচারক তার বিরুদ্ধে আনা নৈতিক লঙ্ঘনের অভিযোগ গ্রহণ করে এই আদেশ দেন।
পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় পেতংতার্ন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি রায় মেনে নিচ্ছি। আমি সবসময় দেশের জন্য সৎভাবে কাজ করেছি।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়াবে। থামাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিশ্লেষক পুরাবিচ ওয়াতানাসুক বলেন, ‘এই অনিশ্চয়তা সরকারের স্থিতিশীলতাকে আরও দুর্বল করে দিতে পারে।’
উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুনগ্রুংরুয়াংকিত ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপে পেতংতার্নকে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হুন সেনের সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায়। যা মে মাসে সীমান্তে সংঘর্ষে এক কম্বোডীয় সেনার মৃত্যুকে ঘিরে ছিল। ফোনালাপে তিনি একজন থাই সেনা কর্মকর্তাকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন, যা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয় এবং ব্যাংককে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন।
এদিকে গতকাল একটি পৃথক ঘটনায় পেতংতার্নের পিতা ও থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন শিনাওয়াত্রা ব্যাংককের এক আদালতে হাজির হন রাজা-অপমানবিষয়ক মামলায়। ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজতন্ত্র নিয়ে মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে দেশটির ‘লেসবাজেস্ট’ আইনে অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
এ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক থিতিনান পংসুদিরাক মন্তব্য করেন, ‘পেতংতার্ন ও থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে ঘিরে চলমান দুটি মামলার মধ্যে এমন কিছু সংযোগ রয়েছে, যা সরাসরি এবং অস্বীকার করার সুযোগ নেই। শিনাওয়াত্রা পরিবার বর্তমানে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে।’