যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় ক্যাথলিক চার্চের একটি স্কুলে বন্দুক হামলায় দুই শিশু নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ১৭ জন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় বুধবার সকালে মিনিয়াপোলিস শহরের অ্যানানসিয়েশন চার্চের ওই স্কুলে হামলা চালায় এক বন্দুকধারী। পরে তিনিও আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছে মিনেসোটা পুলিশ।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) ধারণা, ‘ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের প্রতি তীব্র ঘৃণা’ থেকে এ হামলা হতে পারে।
মিনিয়াপোলিস পুলিশ জানায়, স্কুলটির পাশেই অ্যানানসিয়েশন চার্চ। ওই স্কুলে পাঁচ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরা পড়াশোনা করে। সকালে শিশুরা ক্লাস শুরুর আগে প্রার্থনায় অংশ নেয়। তখনই হামলাকারী বাইরে থেকে জানালার ভেতর দিয়ে গুলি চালায়। এতে আট ও ১০ বছর বয়সী দুই শিশু নিহত হয়।
ইতোমধ্যে রবিন ওয়েস্টম্যান (২৩) নামে এক ব্যক্তিকে হামলাকারী বলে শনাক্ত করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তার মা মেরি গ্রেস ওয়েস্টম্যান ওই স্কুলে কাজ করতেন।
মিনিয়াপোলিস পুলিশের প্রধান ব্রায়ান ও’হারা জানান, হামলার পর স্কুল ও চার্চের মাঠ থেকে হামলাকারীর ব্যবহৃত একটি রাইফেল, একটি শটগান ও একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া, একটি ‘স্মোক বোমা’ পাওয়া গেছে।
শিশুদের ওপর বন্দুক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এফবিআই পরিচালক ক্যাশ প্যাটেল এক্স পোস্টে বলেন, ‘এই হামলাটি “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে” শিশু ও উপাসনারত মানুষদের লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। শিশুদের উপর এভাবে গুলি চালানোর নির্মমতা ও কাপুরুষতা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’
এ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ জানান হামলায় হতাহতদের সম্মানে হোয়াইট হাউসে মার্কিন পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এই ‘হৃদয়বিদারক ঘটনায়’ ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের পোপ লিও চতুর্দশ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘শিশুদের উপর এই বর্বরোচিত হামলায় আমি গভীরভাবে শোকাহত।’
যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিষয়ক সাময়িকী এডুকেশন উইকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবছর দেশটির বিভিন্ন স্কুলে শতাধিক বন্দুক হামলা, দুর্ঘটনাবশত বন্দুকের ব্যবহার, কিংবা অপ্রাপ্তবয়সী শিশুদের কাছে বন্দুক থাকার মতো ঘটনা ঘটেছে।
সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ৩৯টি স্কুলে গুলির ঘটনায় আট জন শিক্ষার্থীসহ ১৮ জন নিহত হয়েছেন।