মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে ৩৯৬ বাংলাদেশিসহ ৭৭০ জন ‘অবৈধ অভিবাসীকে’ আটক করেছে দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। কুয়ালালামপুরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা বুকিত বিনতাং থেকে তাদের আটক করা হয়।
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে’র প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে আটক করতে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৭টা থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়। ‘অপারেশন বেলাঞ্জা’ নামের ওই অভিযানে সম্বিলিত বাহিনীর শতাধিক সদস্য অংশ নেন।
এ সময় অভিযুক্তদের ওপর কঠোর নজরদারি রাখতে পুরো এলাকা ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাতের বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত একটি ক্লাবকে ‘লকডাউন জোন’ ঘোষণা করা হয়।
অভিবাসন দপ্তরের পরিচালক ও অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তা বাসরি ওসমান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৩৯৬ জন বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ৩৯৪ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। এছাড়া মিয়ানমারের ২৩৫ জন পুরুষ, নেপালের ৭২ জন, ভারতের ৫৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১৭ জন পুরুষ ও ২ জন নারী এবং আরও ৯ জন বিভিন্ন দেশের নাগরিককে ওই অভিযানে আটক করা হয়।
আটক হওয়া অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, কারও কারও যথাযথ কাগজপত্র নেই, আবার কেউ কেউ অনুমোদনবিহীন কাজে জড়িত দাবি করে বাসরি বলেন, ‘অনেকে ধরা পড়া এড়াতে নৈশ ক্লাবের টেবিলের নিচে, গুদামঘরে কিংবা ছাদে লুকানোর চেষ্টা করেন।’
তিনি জানান, এই অভিযান পরিচালনার আগে টানা তিন সপ্তাহ ওই এলাকায় নজরদারি চালায় কর্তৃপক্ষ। বাসরি বলেন, ‘এলাকাটিতে অনিবন্ধিত অভিবাসীদের অবস্থানের বিষয়ে অসংখ্য অভিযোগ পাওয়ার পরে অভিযান চালানো হয়। এই এলাকা অবৈধ অভিবাসীদের জন্য একটি আকর্ষণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।’
আটককৃতদের প্রাথমিক যাচাইয়ের জন্য পুত্রজায়ার অভিবাসন দপ্তরে নেওয়া হবে ও পরে আটককেন্দ্রে পাঠানো হবে বলেও জানান বাসরি। তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়াব, যাতে মালিকরা কেবল অনুমোদিত কোটার মধ্যে বিদেশি কর্মী নিয়োগ দেয়।’
এর আগে ১৫ আগস্ট কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (কেএলআইএ) অভিযান চালিয়ে ৯৮ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠায় মালয়েশিয়ার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং সুরক্ষা সংস্থা (এমসিবিএ)।
অভিযোগ রয়েছে, ভুয়া হোটেল বুকিং, ফিরতি টিকিট ও ‘আর্থিক সক্ষমতা’ না থাকার অভিযোগ এনে দেশটিতে প্রবেশ করতে না দিয়েই ওই বাংলাদেশিদের অন্য ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরত পাঠিয়ে দেয় এমসিবিএ।