মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: ছোট পাখিদের জন্য শোক

টাইমস রিপোর্ট
2 Min Read
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির ভয়াবহতার স্মারক এই আধপোড়া স্কুল ব্যাগ। ছবি: শামীম-উস-সালেহীন

একটি ছেঁড়া ও আধা পোড়া স্কুলব্যাগ। চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কাগজপত্র, প্লাস্টিকের পানির বোতল, ভাঙা ইট, আর ধুলাবালি যেন সাক্ষ্য দিচ্ছে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির ভয়াবহতার।

একসময় যে ব্যাগ ছিল শিক্ষার্থীর প্রতিদিনের সঙ্গী, আজ তা হয়ে পরিত্যাক্ত। ছোট পাখির ছোট কথা, ছোট ছোট স্বপ্ন, পড়ালেখার কলরব—সবই এখন স্মৃতি।

পাশেই এক গাদা কাগজের নিচে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রূপন্তীর হাতে লেখা একটি আবেদনপত্র। সাদা পাতাটি এখন মলিন, মাটি মাখা। সেখানে লেখা, ‘মাননীয় প্রধান শিক্ষক, আমার অনুপস্থিতির দিনে জন্য ছুটি মঞ্জুর করতে বিনীত অনুরোধ করছি।’

চারপাশের ধ্বংসযজ্ঞ ও বিভীষিকার মাঝে দাঁড়িয়ে সুলিখিত আবেদনপত্র নিঃশব্দে যেন বলছে—এর রচয়িতা এক নিষ্পাপ প্রাণের, যে একেবারে ছুটি নিয়েছে জীবন থেকেই।

আরেক শিক্ষার্থী মারিয়ামের লেখা আরেক আবেদনপত্র পোড়া ছাই আর ধুলোবালিতে এতোটাই মলিন যে তা আর পড়া যাচ্ছে না। তবে তৃতীয় শ্রেণির ‘স্কাই’ সেকশনের শিক্ষার্থী আসমাউল হুসনা জায়রার রঙিন খাতা প্রায় অক্ষত, তাতে রয়েছে শুধু হালকা পোড়া দাগ।

এক কোণে কাদায় মাখা একটি পেন্সিল ব্যাগ পড়ে আছে, যার ভেতরে এখনো অক্ষত কলম, ছবি আঁকার পেন্সিল—জানান দিচ্ছে এক শিক্ষার্থীর নিথর জীবনের ক্ষুদ্র অস্তিত্ব।

ধ্বংস স্তুপে চোখে পড়ছে একটি রঙিন খাতা, হাতের তৈরি প্রজাপতি আঁকা। এক সময় এই খাতা ছিল আনন্দময় পাঠের সাক্ষী। এখন এর পুড়ে যাওয়া পাতাগুলো বলছে, এইখানে পুড়েছে শৈশব জীবন।

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাকে ঘিরে সোমবার এসব করুণ চিত্র উঠে এসেছে। স্কুলের কোমলমতিরা যখন কেউ ছিল ক্লাসে, কেউ বা ক্লাসের ফাঁকে খেলছিল মাঠে—সেই সময়ে আঘাত হানে দুঃস্বপ্নের মতো বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সবশেষ খবর অনুযায়ী, মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জন। এ ঘটনায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে এখনো চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৬৫ জন।

 

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *