বাঁধ ভেঙে ২০ গ্রাম প্লাবিত, হাজারো মানুষ জলবন্দী

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
ভাড়ী বৃষ্টিপাতে জলবন্দী হয়ে পড়েছেন পটুয়াখালীর হাজার হাজার মানুষ। ছবি: ইউএনবি
Highlights
  • পটুয়াখালীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মো. রাকিব জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন শেষে বেড়িবাঁধের ভাঙন মেরামত করা হবে। এজন্য জিও ব্যাগ প্রস্তত রয়েছে।

 

পটুয়াখালীর গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে, সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। এরই মধ্যে জোয়ারের চাপে একাধিক স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে অন্তত ২০টি গ্রাম।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধ ভাঙার ফলে গলাচিপা, বাউফল, দশমিনা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার বেড়িবাঁধহীন বিভিন্ন চরের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এমনকি সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে ধসে পড়েছে কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ।

জোয়ারের তোড়ে গলাচিপা পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সেখানে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ওই এলাকার ঘরেগুলোতে ঢুকে পড়েছে জোয়ারের পানি। অনেক পরিবারে চুলা পর্যন্ত জ্বলেনি, ব্যবসায়ীদের মজুতকৃত ধান, ডাল ও বাদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। তাছাড়া, গলাচিপার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চল বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, জোয়ারের পানিতে ফেরির জেটি তলিয়ে যাওয়ায় নদীবেষ্টিত এই উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান জানান, ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিবারগুলোকে দ্রুত সহায়তা দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে, পানপট্টি ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বরওয়ার্ডের পানপট্টি বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ৫৫/৩ নম্বর পোল্ডারের প্রায় ১০ থেকে ১৫ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে বিবির হাওলা, গুপ্তের হাওলা, সুতিরাম ও খরিদা গ্রামসহ চারটি গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে।

পানপট্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, ‘আরও ১০ থেকে ১২টি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। ফলে এই এলাকার প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছেন। লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে গেছে ফসিল জমি, পুকুর ও ঘের।’

বেড়িবাঁধবিহীন চর কাজল ইউনিয়নের চর শিবার ধলার চর এলাকায় ২০০টি ঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া বড় চর কাজলের আরও দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গলাচিপা সদর ইউনিয়নের আগুনমুখা চরের ৬০টি ঘর এবং চর কারফারমার ৯০টি ঘর পানিতে ডুবে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন ডাকুয়া, গজালিয়া, কলাগাছিয়া ও নলুয়াবাগীর মানুষ।

অন্যদিকে, রাঙ্গাবালীর মৌডুবি, চরআন্ডার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৫ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে ভাটার অপেক্ষায় সময় গুনছেন। বাউফলের তেতুলিয়া নদী পাড়ের বাসিন্দারা ঝুপড়ি ঘর ছেড়ে উঁচুতে আশ্রয় নিয়েছেন। পাশাপাশি দশমিনার বাঁশবাড়িয়ার বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

নিম্নচাপের প্রভাবে ধেয়ে আসা কুয়াকাটায় সুউচ্চ ঢেউয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কুয়াকাটার মেরিন ড্রাইভের আদলে নির্মিত সড়কের বড় অংশ ধসে পড়েছে।

পটুয়াখালীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মো. রাকিব জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন শেষে বেড়িবাঁধের ভাঙন মেরামত করা হবে। এজন্য জিও ব্যাগ প্রস্তত রয়েছে।

 

 

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *