বরগুনা জেলাসদর, আমতলী, তালতলী, বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটার ৪৮০ কিলোমিটার সড়কের এখন বেহাল দশা। সড়কগুলোতে বড় বড় গর্ত থাকায় পানি জমে গাড়ি চলাচলে হয় চরম ভোগান্তি। বরাদ্দ না থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ রাস্তাগুলো সংস্কারও করতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) জানায়, বরগুনার ছয় উপজেলায় এলজিইডির আওতায় ৭ হাজার ৫৬১ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়কের মধ্যে এক হাজার ৪৪১ কিলোমিটার কার্পেটিং। বাকি ছয় হাজার ১২০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক। এসব সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করে। প্রতি অর্থবছরে পাকা সড়কের অন্তত তিন ভাগের এক ভাগ মেরামতের প্রয়োজন হয়। সে অনুযায়ী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৪৮০ কিলোমিটার সড়ক মেরামত করতে হবে। সে অনুযায়ী জেলার এ পড়িমাণ পাকা সড়ক সংস্কারে ৩১২ কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ এসেছে মাত্র ৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে আগের অসমাপ্ত কাজের বিল বাবদ যাবে ২০ কোটি টাকা। ফলে কার্যত নতুন মেরামতের জন্য থাকছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা, তা দিয়ে প্রায় ২১ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার সম্ভব।

সরেজমিনে দেখা যায়, বরগুনার আমতলী-তালতলী-সোনাকাটা ৩৬ কিলোমিটারের বেশ দীর্ঘ। জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কপথেই তালতলী থেকে ঢাকায় যাওয়া যায়। পর্যটনের সম্ভাবনাময় এই উপজেলায় ঢাকা থেকে যাওয়ার এটিই একমাত্র পথ। তিন বছর আগে এ সড়কের কিছু অংশ সংস্কার হলেও বর্তমানে অন্তত ২৪ কিলোমিটার জুড়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। যা সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যে কারণে জনদুর্ভোগ এখন চরমে।
একই অবস্থা সদর উপজেলার নলী বাজার থেকে বরগুনা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়কেও। এছাড়া ছোটবগী-তালতলী, বরগুনা-চালিতাতলী, বরগুনা-কালিরতবক, পরীর খাল-রাখাইনপাড়া, বামনা-খোলপটুয়া, বামনা-বুকাবুনিয়া, ডৌয়াতলা-আয়লা বাজার, বৈকালীন বাজার-আয়লা, পচাকোড়ালীয়া-চান্দখালীসহ একাধিক সড়কে প্রচুর খানাখন্দ। যে কারণে ভোগান্তিতে আছেন এ ছয় উপজেলায় বসবাসরত লাখ লাখ মানুষ।
বরগুনার গাড়ি চালক সাবু বলেন, ‘বছরের পর বছর আমরা এমন রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছি, রাস্তার গর্তে পড়ে গাড়ি নষ্ট হয়।’
বামনার যাত্রী মিজানুর রহমান মজনু ও আলো আকতার জানান, বরগুনা হয়ে ফুলঝুড়ি-রামনা-খোলপটুয়ার এ পথে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। এসব রাস্তায় হাঁটতেই কষ্ট হয়, আর গাড়ি চলেই না। তারা সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবিও জানান।
বরগুনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খান বলেন, ‘আমাদের বরাদ্দ কম হওয়াতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো আগে সংস্কার করা হবে। বাকি রাস্তা সংস্কারের জন্য অতিরিক্ত অর্থের আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু হবে।’