বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

admin
By admin
3 Min Read
প্রতীকি ছবি

বড় মাত্রার ভূমিকম্পের শঙ্কায় আছে বাংলাদেশ। শুক্রবার ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ, ভারত, লাওস এবং চীনকে কাঁপিয়েছে। একই মাত্রার ভূমিকম্প বাংলাদেশেও হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চল বেশি ঝুঁকিতে আছে।

শনিবার ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে যে দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে বাংলাদেশেও একই মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য সতর্কতা ও প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, শুক্রবারের ভূমিকম্প যদি বাংলাদেশমুখী প্লেটে ঘটত তাহলে অকল্পনীয় ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব হতো। বাংলাদেশসহ ভারত ও মিয়ানমারের কিছু অংশ জুড়ে ফল্ট থাকায় একটি দেশে ভূমিকম্প হলে পাশের দেশে যে কোনো মুহূর্তে বড় ভূমিকম্প হতে পারে। একই সময়ে মিয়ানমারের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছয়টি দেশে এই ভূমিকম্প প্রমাণ করল বাংলাদেশ বড় ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে।

মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় ভূমিকম্পের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন। ছবি: সংগৃহীত

ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও একই মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা অঞ্চল উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

ভূতত্ত্ববিদ ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ৮ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প সৃষ্টি হওয়া মতো শক্তি জমা হয়ে আছে। যে কোনো সময় সে শক্তি বের হয়ে আসতে পারে। এতে সিলেট ও চট্টগ্রাম ছাড়াও সব থেকে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে রাজধানী।

ভূমিকম্পে ব্যাংককে নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন ধসে পড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঝারি ঝুঁকিতে রয়েছে রাজশাহী। আর কম ঝুঁকিতে দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা ও বরিশাল বিভাগ। চট্টগ্রাম থেকে সিলেট পর্যন্ত বিগত ৪০০ থেকে হাজার বছরে কোনো বড় ধরনের ভূমিকম্প না ঘটায় এসব স্থানে শক্তি জমা হয়ে আছে।

ভূতত্ত্ববিদ ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ভূমিকম্পে যদি রাজধানীর এক শতাংশ বিল্ডিং ধসে পড়ে তাহলে তিন লাখ মানুষ হতাহত হবে। এ অবস্থায় ভূমিকম্প সহনীয় নিরাপদ অবকাঠামো তৈরির পাশাপাশি নিয়মিত মহড়া ও সচেতনতা বাড়ানো দরকার।

মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোর রাস্তায় ফাটল। ছবি: সংগৃহীত

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এবং কাছাকাছি এলাকায় ২৮টি ভূমিকম্প হয়। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১টি এবং গত বছর দেশে ও আশপাশে ৫৩টি ভূমিকম্প হয়েছে। এটি ছিল আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ৯০ দিনে বাংলাদেশ-ভারত-মিয়ানমারে মৃদু ও বিভিন্ন মাত্রার ৬০টির বেশি ভূমিকম্প হয়েছে।

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ছোট ও মাঝারি ভূকম্পনে বড় শক্তি বের হওয়ার একটা প্রবণতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তার মানে, যে কোনো সময় একটি বড় ভূমিকম্প সংঘটিত হতে পারে। ৭ মাত্রার ভূমিকম্পগুলো ফেরত আসার একটি সময় হয়ে গেছে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *