জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দোসররা প্রশাসনে ঘাপটি মেরে আছে, যারা নানাভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ‘জুলাই ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান: প্রত্যাশা, প্রাপ্তি ও করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে দেখেছি জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব অপরাধী ধরা পড়েনি। তাদের গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এই বিচার না হলে ভবিষ্যতে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।’
নতুন ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকাতে এবং টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে জুলাই গণহত্যার বিচার প্রথম মাইলফলক। দলীয়করণ মুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, বিচার ও সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ জন্ম নেবে না, যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের শিখিয়েছে যে জনগণ সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকে, তারাই শাসকের অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে। তাই একটি মজবুত ও স্থিতিশীল গণতন্ত্র গড়ে তুলতে হবে, যেখানে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ—বিচার, আইন ও নির্বাহী হবে স্বাধীন, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান ও স্বার্থরক্ষার ভিত্তিতে সম্পর্ক হোক। সীমান্ত হত্যা, ট্রানজিট ও করিডোর ইস্যুতে কোনো আপস নয়। দেশের স্বার্থে প্রয়োজন হলে তা প্রত্যাখ্যান করাও জরুরি।’
জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘নৈতিকতা ও আদর্শভিত্তিক শিক্ষা, উৎপাদনমুখী সৎ শিক্ষা, প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি ও রাষ্ট্রীয় ভারসাম্যের ওপর জোর দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। এজন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহণযোগ্য জাতীয় কাঠামো গঠন প্রয়োজন। রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংস্কার, দলগুলোর ঐক্য এবং জাতীয় ঐকমত্য অপরিহার্য।’
সেমিনারে ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ ও আহত যারা’ বইয়ের ইংরেজি ও আরবি সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।