ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনি ও তরুণ গায়ক শেখ সাদীর মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে বিনোদন অঙ্গনে গুঞ্জনের শেষ নেই। তারা সরাসরি কখনোই এটি প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও তাদের আচরণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আদান-প্রদানের ধরন ও একে অপরের পাশে থাকার ঘটনা সেই সম্পর্কের ইঙ্গিত দিয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকের কিছু পোস্টে আবারও আলোচনায় এসেছে তাদের সম্পর্ক। তবে এবার তাতে পাওয়া যাচ্ছে ভাঙনের সুর।
একসময় পরীমনির প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকা সাদীকে দেখা গেছে তার বিপদের সময় পাশে দাঁড়াতে। এমনকি পরীমনির বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে তিনি জামিনদার হয়ে আদালতে হাজিরও হন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তাদের প্রেমের খবর প্রথম প্রকাশ্যে আসে। এরপর একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়া, ফেসবুক পোস্টে একে অপরের প্রশংসা— সবকিছুই প্রকাশ্যে চলে আসে।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের পোস্টগুলোতে স্পষ্ট হয়েছে মান-অভিমান চলছে। পরীমনি ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ তুলে পোস্ট করলেও মন্তব্য ঘর বন্ধ রেখেছেন। অপরদিকে সাদীর এক পোস্টে কেউ মন্তব্য করেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত পরীটাও ছ্যাঁকা দিয়ে দিল।’ এমন মন্তব্যে তাদের ভক্ত ও অনুসারীরা হতাশা প্রকাশ করছেন।

পরীমনির ঘনিষ্ঠজনদের মতে, তাদের সম্পর্ক ভাঙনের পেছনে রয়েছে একজন গৃহকর্মী। জানা গেছে, কিছুদিন আগে পরীমনির বাসায় কাজ শুরু করেছিলেন ওই গৃহকর্মী। কিন্তু সন্তানের দায়িত্বে অবহেলা করার অভিযোগে পরীমনির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। এ কারণে তাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর ওই গৃহকর্মী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা বিভ্রান্তিকর ও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করে দেন, যা সাদীর সঙ্গে নায়িকার সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অবশ্য একাধিক ঘনিষ্ঠজন এই অভিযোগকে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ বলে অভিহিত করেছেন।

তবে তাদের সম্পর্ক চূড়ান্তভাবে ভেঙে গেছে কিনা, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো ঘোষণা আসেনি। কেউ কেউ মনে করছেন– এই মান-অভিমান অস্থায়ী, আবারও সম্পর্ক জোড়া লাগতে পারে। তবে অনেকেই বলছেন, সম্পর্ক এমন একপর্যায়ে পৌঁছেছে যেখান থেকে ফেরার পথ নেই।
তিন বছর আগে ‘গুণিন’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন নায়ক শরিফুল রাজের সঙ্গে পরীমনির পরিচয় হয়, যা গড়ায় প্রেম ও বিয়েতে। তাদের এক ছেলে আছে। তবে সেই সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি। বিচ্ছেদের পর পরীমনি সন্তান ও কাজ নিয়ে ব্যস্ত হন। অপরদিকে রাজ ব্যস্ত তার অভিনীত চলচ্চিত্র নিয়ে। মাঝে মধ্যে সন্তানের কারণে তাদের দেখা হলেও একজনের কাছে অপরের আর আগের সুখকর কোনো স্থান নেই।

এদিকে পরীমনি একসময় বলেছিলেন, ‘যারা বিপদের সময় পাশে থাকেন, তারাই আশীর্বাদ।’ আর শেখ সাদী বলেছিলেন, ‘পরীমনির অনেক ইতিবাচক গুণ আছে।’ তাদের কথাগুলো এখন শুধুই অতীত স্মৃতি। নতুন গানে বা ফেসবুক পোস্টে আর সেই আস্থা দেখা যাচ্ছে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের সম্পর্কের এই টানাপোড়েন এখন গণমাধ্যমে আলোচনার অন্যতম বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সম্পর্কের পরিণতি যা-ই হোক না কেন– আপাতত এটুকু স্পষ্ট যে, পরীমনি ও শেখ সাদী নিজ নিজ জগতে ফিরে গেছেন। একজন সিনেমায়, আরেকজন গানে।