আগের ম্যাচে ডাচদের স্কোরবোর্ড যতটা সুশ্রী ছিল, একদিনের ব্যবধানে সেখানে আরো করুণ দশা। ৮ উইকেটে ১৩৭ রান করে ম্যাচ হারলেও দ্বিতীয়টায় কোনোরকমে পেরিয়েছে ১০০। সিলেটে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে খেলতে পারেনি পুরো ২০ ওভারও। গুটিয়ে গেছে ১৫ বল আগেই। যদিও ইনিংসের শুরুটা ছিল ম্যাক্স ও’ডাউডের প্রথম বলে মারা চার দিয়ে। কিন্তু যত ইনিংস এগিয়েছে ততই মলিন হয়েছে ডাচদের কমলা জার্সি।
বাংলাদেশ শিবিরে ছিল অবশ্য ভিন্ন চিত্র। আগের ম্যাচে ব্যর্থ হলেও সিলেটে সোমবার রাতে হেসেছে তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাট। এই বাঁহাতি ওপেনারের অপরাজিত ফিফটিতে ৪১ বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। .৯ উইকেটের এই জয়ে ডাচদের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। দেশ ও দেশের বাইরে সব মিলিয়ে সর্বশেষ তিন সিরিজেই জয় পেলেন লিটনরা।
ম্যাচের একদিন আগে ডাচ অলরাউন্ডার নোয়াহ ক্রোয়েস সংবাদ সম্মেলনে এসে বলে গিয়েছিলেন, প্রথম ম্যাচে হেরেছি তো কী হয়েছে? এখান থেকে সিরিজ না জেতার তেমন কোনো কারণ দেখছেন না। তরুণ ক্রোয়েস এই কথা বলেছেন দলের অবস্থাটা তুলে ধরতেই। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সে ছিল না এর ছাপ।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে নাসুম আহমেদের স্পিন জাদু, মাঝে ও শেষে মোস্তাফিজুর রহমান তাসকিন আহমেদের পেস তোপে এলোমেলো ব্যাট করেছে ডাচরা। আগের ম্যাচে সাইড বেঞ্চে বসে থাকা নাসুম এই ম্যাচের একাদশে ফিরেই দেখালেন ভেলকি।
নিজের করা দ্বিতীয় বলেই তুলে নেন ম্যাক্স ও’ডাউডের উইকেট। শর্ট অফ লেংথে করা পরের বলে তেজা নিদামানুরু ক্যাচ দেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে পারভেজ ইমনের হাতে। তাকে এক ম্যাচে বসিয়ে রেখে টিম ম্যানেজমেন্ট আর অধিনাইয়ক ভুল করেছিলেন কিনা, সেটা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। কারণ ডাচদের এই ম্যাচের একাদশে ছিল পাঁচজন ডানহাতি। সাদা বলের আধুনিক ক্রিকেটে ডানহাতি ব্যাটাররা যেভাবে বাঁহাতি স্পিনারদের বিপক্ষে ভুগেন, সেটা প্রমাণ হলো নাসুমের হাতে আরো একবার। ৪ ওভার শেষ করেছেন ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে।
নাসুমের শুরুর এই ধাক্কা পর ডাচরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি অবশ্য। না ব্যাটে, না বলে। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৪০ রানের ওপেনিং জুটিতে অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছিলেন তানজিদ আর ইমন। ডাচদের একমাত্র সাফল্যও অবশ্য এই জুটি ভাঙা। নাথান ক্লেইন নিয়েছেন ইমনের উইকেট। এরপর ৩৯ বলে ফিফটি ছোঁয়া তানজিদ জয় নিশ্চিত করেছেন লিটনের সাথে ৬৪* রানের জুটিতে।
ম্যাচ জিতলেও কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, চেনা কন্ডিশনেও কেন টস জিতে টানা দুই ম্যাচে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া? প্রস্তুতির এই মঞ্চেও বাংলাদেশ করেনি কোনো পরীক্ষানিরীক্ষা। সিলেটের ডিউ ফ্যাক্টরের কথা মাথায় রেখে নেয়নি আগে ব্যাট করার ঝুঁকি। বোলারদের প্রস্তুতির বেশিরভাগটাই হয়ে গেছে এই দুই ম্যাচে। তবে ব্যাটাররা কে কেমন অবস্থায় আছেন, সেটা বোঝারও খুব বেশি উপায় নেই। কারণ দুই ম্যাচই বাংলাদেশ জিতেছে বড় ব্যবধানে।