মুন্সিগঞ্জ টার্মিনালে থেমে থাকা একটি লঞ্চে দুই তরুণীকে প্রকাশ্যে মারধরের ভাইরাল ভিডিও যাচাইয়ের পর নেহাল আহমেদ জিহাদ নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক লঞ্চের দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর করছেন, আর আশপাশে থাকা লোকজন মোবাইলে সেই দৃশ্য ধারণ করছেন ও স্লোগান দিচ্ছেন। ওই ভিডিওর ভিত্তিতে পুলিশ জিহাদকে থানায় ডেকে নেয়।
পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী দুই তরুণীর বয়স আনুমানিক ১৯-২০ বছর, এবং তারা এমভি ক্যাপ্টেন নামের লঞ্চে অবস্থান করছিলেন। তাদের পরিচয় জানা গেলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
অভিযুক্ত নেহাল আহমেদ জিহাদ মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা। আটকের পর জিহাদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, ‘ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে একটি দল চাঁদপুরের মোহনপুরে পিকনিকে যায়। ফেরার পথে তাদের বহনকারী লঞ্চটি মুন্সিগঞ্জ টার্মিনালে থামে, যেখানে পিকনিকের টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে যাত্রীদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।’
‘এক পর্যায়ে রাত ৮টার দিকে স্থানীয়রা যাত্রীদের অশালীন আচরণের অভিযোগ তুলে লঞ্চে ভাঙচুর চালায়। এ সময় মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এক ভুক্তভোগীকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হলেও তিনি এগিয়ে আসেননি এবং তার ফোন বন্ধ রয়েছে।’
অন্যদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জিহাদ দাবি করেন, ‘লঞ্চে কিছু লোক লুটপাট করছিল, আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে সেখানে যাই। আমরা পৌঁছানোর পর যাদের চিনতাম, তাদের সরিয়ে ফেলি। তখন সেখানে থাকা তরুণীদের পোশাক ও আচরণে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের আক্রমণ করতে উদ্যত হয়।’
তিনি বলেন, ‘তরুণীরা আমার কাছে অনুরোধ করে তাদের রক্ষা করার জন্য। আমি সেটা ভালো উদ্দেশ্যেই করেছিলাম। ভাই হিসেবে আমি হস্তক্ষেপ করে তাদের দুই-তিনবার মারি, যেন পরিস্থিতি শান্ত হয়। আমি আইনকে সম্মান করি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ভাই হিসেবে সামান্য শাসন করেছি।’
পুলিশ জানিয়েছে, জিহাদ ও অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হচ্ছে এবং অন্য অভিযুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।