ডিসেম্বরের মধ্যে মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার

টাইমস রিপোর্ট
2 Min Read
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে মিয়ানমার জান্তা সরকার। ছবি: ইরাবতি

ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের পর এই ঘোষণা এল। 

সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানায়, নির্বাচন সামনে রেখে সামরিক সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও দেশটির বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা আরও পাকাপোক্ত করা।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে জান্তা সরকার জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। সেই থেকেই মিয়ানমারে একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়, যা এখনো চলছে।

রাজধানী নেপিডোতে সামরিক সরকারের এক অনুষ্ঠানে জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং বলেন, ‘আমরা প্রথম অধ্যায় অতিক্রম করেছি, এখন দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করছি।’ একই সঙ্গে তিনি নিজেকে নতুন গঠিত ‘ইউনিয়ন সরকার’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তি কমিশন’-এর প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেন। আপাতত তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও পালন করছেন।

জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে জান্তা সরকারের মুখপাত্র জাও মিন তুন বলেন, ‘দেশকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে ফেরাতে আজই জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে।’ তিনি জানান, ছয় মাসের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনের আগে নতুন একটি কঠোর আইন জারি করেছে জান্তা সরকার। এই আইনের আওতায় কেউ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করলে তার সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার জানায়, ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারে প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। যদিও এখনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।

জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ‘প্রতারণামূলক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সেনাশাসনের বৈধতা প্রতিষ্ঠা।

গত বছর পরিচালিত এক আংশিক আদমশুমারিতে দেখা যায়, দেশটির ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখের তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। ‘গুরুতর নিরাপত্তা পরিস্থিতি’কে এর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, নির্বাচনকে ঘিরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হামলা আরও বাড়তে পারে। অন্যদিকে, নির্বাচনের পরেও সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং প্রেসিডেন্ট অথবা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে ক্ষমতার কেন্দ্রে থেকেই দেশের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখবেনএমনটিই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *