ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে প্রশাসনের ভূমিকা, নির্বাচনী আচরণবিধি, নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে নানা দাবি ও অভিযোগ তুলেছেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা।
নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ভোট প্রক্রিয়ার ধীরগতি, প্রচার কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতা এবং প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব—এসব বিষয়েই প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বুধবার বিকালে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। সেখানেই উঠে এসেছে এসব প্রসঙ্গ।
ছাত্রদলের সহসভাপতি প্রার্থী আবিদুর রহমান খান অভিযোগ করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপ নাম পরিবর্তন করে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে, যা নির্বাচনী পরিবেশ অস্থিতিশীল করছে। এই গ্রুপগুলো বন্ধ না হলে আমরা নির্বাচন নিয়ে ভালো বোধ করব না।’
নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রতি ভোটে ৮–১০ মিনিট লাগায় বিশৃঙ্খলার ঝুঁকি রয়েছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনের মতো অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা আবারও ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।’
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি প্রার্থী উমামা ফাতেমা সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রচারণার সুযোগ সীমিত করে দিলে প্রার্থীরা কীভাবে শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছবে?’
তিনি প্রচার চালানোর জন্য একটি স্পষ্ট ফরম্যাট প্রণয়নের দাবি জানান। একই সঙ্গে পরীক্ষা ও নির্বাচনের সময়সূচির সমন্বয়হীনতাকে তিনি প্রার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ বলে উল্লেখ করেন।
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের সহসভাপতি প্রার্থী আব্দুল কাদেরের অভিযোগ, নারী শিক্ষার্থীরা মোরাল পুলিশিং ও সাইবার হ্যারাসমেন্টের শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা তাদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করছে।’
নির্বাচন কমিশনের নীরবতায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এটিকে ‘অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি’ বলে উল্লেখ করেন।
ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের সহসভাপতি প্রার্থী সাদিক কায়েম প্রশাসনিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলেন, ‘রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে কর্মকর্তাদের সুবিধা দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো উদ্যোগ নেই।’
অভিযোগ করে এই নেতা আরও বলেন, ‘প্রশাসন একটি ছাত্র সংগঠনকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে, অথচ সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করছে না।’