ঝিনাইদহে মাত্র ২০ টাকা পাওনা পরিশোধ নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে ছুরিকাঘাতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. মঞ্জুর বিশ্বাস (৩৮)। তিনি ঝিনাইদহ পৌরসভার লক্ষ্মীকোল গ্রামের মৃত ইয়াকুব বিশ্বাসের ছেলে।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মঞ্জুরের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই তাকে ছুরিকাঘাতকারী শাহ আলমের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ স্বজনরা। শাহ আলমের মাকেও মারধর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুপুর থেকেই শাহ আলমের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
গত ১৩ আগস্ট দুপুরবেলা ঝিনাইদহ আদালত চত্ত্বরে একটি চায়ের দোকানের সামনে কথাকাটাকাটির জের ধরে মঞ্জুরের বাম কাঁধের পেছনে ছুরিকাঘাত করেন শাহ আলম। গুরুতর আহত মঞ্জুরকে প্রথমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে এবং পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৪ আগস্ট তাকে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর সেখান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তার মৃত্যু হলো।
মঞ্জুরকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ১৫ আগস্ট তার মা আসমানী খাতুন বাদি হয়ে শাহ আলম, তার আরেক ভাই ইমরান হোসেন ও ছোট ভাই আবির হোসেনের নামে হত্যা চেষ্টা মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শাহ আলমের কিশোর ছোট ভাই আবিরের কাছ থেকে ২০ টাকা ধার নিয়েছিল নিহত মঞ্জুরের ছেলে রিফাত। সেই টাকা সে পরিশোধ না করায় গত ১১ আগস্ট রিফাতের বাইসাইকেল কেড়ে নেয় আবির। এই ঘটনা মীমাংসার জন্য ১৩ আগস্ট আদালত চত্বরের নাসিরের চায়ের দোকানের সামনে শাহ আলমকে ডেকে আনে মঞ্জুর ও তার পক্ষের লোকজন।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, এ সময় কয়েকজনে মিলে শাহ আলমকে মারধর করে। তাদের হাত থেকে প্রথমে ছুটে পালিয়ে যান শাহ আলম। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে পকেট থেকে ‘গিয়ার নাইফ’ বের করে মঞ্জুরের পিঠে আঘাত করে পালিয়ে যান তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই মামলায় মঙ্গলবার তিন আসামিই আত্মসমর্পণ করে। বিজ্ঞ আদালত শাহ আলমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় এবং বাকী আসামিদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে।’
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঞ্জুরের মৃত্যু হয়েছে। এখন হত্যা চেষ্টা মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে।
শাহ আলমের স্ত্রী রিপা খাতুন জানান, মঞ্জুরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ওই বাড়ির লোকজন এসে তাদের ঘরবাড়িতে আগুন দেয়, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভায়।
মঞ্জুরের বাড়ির লোকজন তার শ্বাশুড়িকে মারধর করেছে বলেও জানান রিপা খাতুন।