চিকিৎসকদের নিয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের মন্তব্যকে ‘চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন’ এবং ‘রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থানের শামিল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি মনে করে, এমন বক্তব্য চিকিৎসক সমাজের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকের বিশ্বাসকেও আঘাত করেছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রধান ডা. মো. আব্দুল আহাদ বলেন, ‘চিকিৎসকরা শুধু একটি পেশার প্রতিনিধি নন, তারা এই দেশের মানুষের জীবন রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তাদের সম্মানহানিকর বক্তব্য জাতির জন্য লজ্জাজনক এবং অনভিপ্রেত।’
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার সময় যখন বহু চিকিৎসক প্রাণ হারিয়েছেন, তখনও তারা চিকিৎসাসেবা থেকে সরে দাঁড়াননি। আবার সাম্প্রতিক জুলাই আন্দোলন-সংকটেও তারা আহত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, এমনকি নিজের জীবন বাজি রেখে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চিকিৎসকরা সব সময় রাষ্ট্রের সংকটে এগিয়ে এসেছেন- তা স্বাস্থ্য সংকট হোক বা রাজনৈতিক সহিংসতার সময়। দমন-পীড়নের মধ্যেও তারা হাসপাতালে ও মাঠে থেকে সাধারণ মানুষের সেবা দিয়েছেন। এ রকম একটি পেশার বিরুদ্ধে অপমানসূচক মন্তব্য শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, তা জনআস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ।
এনসিপি মনে করে, একজন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার কাছ থেকে এমন মন্তব্য দায়িত্ববোধের ঘাটতিরই প্রতিফলন। ‘এ ধরনের মন্তব্য সরকারের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে,’ বিবৃতিতে বলা হয়।
এনসিপি দাবি করে, চিকিৎসকদের সম্মান রক্ষায় সরকারকে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে এবং অধ্যাপক আসিফ নজরুলের বক্তব্য প্রত্যাহার করা উচিত।
এর আগে শনিবার (১৬ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানে চিকিৎসকদের অনেকেই তাদের রোগীদের স্বার্থ না দেখে ওষুধ কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করেন বলে মন্তব্য করেন ড. আসিফ নজরুল। রোগীদের নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠে আসে আইন উপদেষ্টার বক্তব্যে।
আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশের বড় বড় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার নির্দিষ্ট সময় কেন বরাদ্দ থাকে, যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না।
প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, চিকিৎসকরা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে কাজ করছেন?
এই বক্তব্যের পর চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।