মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খালাস পাওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বুধবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি আগে থেকেই বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক সুরাইয়া আক্তার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার আপিল বিভাগ থেকে খালাসের রায় পাওয়ার পর রাতে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আসে। যাচাই–বাছাই শেষে সকালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুলকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে তার করা আপিলে ২০২৫ সালের ২৭ মে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে তাকে খালাস দেন।
রায়ে বলা হয়, অন্য কোনো মামলা বা আইনগত বাধা না থাকলে আজহারুলকে মুক্তি দিতে হবে।
২০১২ সালের ২২ আগস্ট ঢাকার মগবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৫ সালে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি। পরে ২০১৯ সালে আপিলের ওপর রায় দেওয়া হয় এবং ২০২০ সালে তা প্রকাশ পায়। এর বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করা হলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুনানি শেষে পুনরায় আপিলের সুযোগ দেওয়া হয়।
সেই শুনানির ফলেই অবশেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর মুক্তি পেলেন আজহারুল।
এদিকে, আজহারুলকে খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে তা শেষ হয়। এ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মিছিল শেষে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার বলেন, ‘একাত্তরের গণহত্যার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি এটিএম আজহারকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সেই সাথে আমরা ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকে হুঁশিয়ারি দিতে চাই বাংলাদেশের বুকে কোনো গণহত্যাকারীর ঠাঁই হবে না। ইন্টেরিম সরকার একটি বিপ্লবের পরে মানুষের মনে জন্ম নেওয়া আশাকে ভূলুণ্ঠিত করছে।’