কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত ও আশপাশের এলাকা থেকে সোমবার ১৬ ঘণ্টার মধ্য ছয়টি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এসব ঘটনা পর্যটকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তথ্যে নিহতদের মধ্যে তিনজন পর্যটক ও একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলে শনাক্ত করা গেছে। অন্য দুজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি, তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইলিয়াস খান জানান, উদ্ধার হওয়া ছয় মরদেহের মধ্যে পাঁচটি তার থানার আওতাধীন এলাকায় মিলেছে। এর মধ্যে একটি মরদেহ এতটাই পচে গেছে যে, এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। রোববার দিবাগত রাত থেকে সোমবার বিকেলের আগে এসব লাশ উদ্ধার হয়।
রামু থানার ওসি মো. তায়েবুর রহমান জানান, সকালে হিমছড়ির পেচারদ্বীপ এলাকা থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহীর শাহিনুর রহমান (৬০) ও তার ছেলে সিফাত (২০)। ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান তার স্ত্রী ইয়াসমিন রহমান এবং দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার সকালেই কক্সবাজারে আসেন। তারা কলাতলী সৈকতের আবাসিক হোটেল সি ক্রাউনে উঠেন। হোটেল থেকে নেমে দুপুরে তারা সৈকতের সায়মন পয়েন্টে সাঁতার কাটতে গিয়ে স্রোতের তোড়ে ভেসে যান। পরে সৈকতের লাইফগার্ডরা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দু’জনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে, সাড়ে ১১ টার দিকে সায়মন বিচের কাছাকাছি নাজিরারটেক পয়েন্ট থেকে এক স্থানীয় জেলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার নাম নুরু সওদাগর। তিনি আগের দিন শৈবাল পয়েন্টের কাছে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন। এছাড়া অজ্ঞাতনামা গলিত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে বকখালী নদীর মোহনা ও খুরুশকুল পুনর্বাসন প্রকল্প সংলগ্ন এলাকা থেকে।
অন্যদিকে ভোরে চট্টগ্রামের ডিসি রোড এলাকার বাসিন্দা মো. রাজিবের মরদেহ ডায়াবেটিস পয়েন্ট এলাকা থেকে উদ্ধার হয়। তিনি বিকেলে তিন বন্ধুর সঙ্গে সমুদ্রে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হন। তখন সৈকতের লাইফগার্ডরা অন্যদের উদ্ধার করতে পারলেও রাজিবকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
নানা কারণে কক্সবাজার সৈকতের অনেক জায়গা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে জানান সেখানে দায়িত্বপালন করা লাইফগার্ডরা। পর্যটকদের মানা করা হলেও তারা সাঁতার কাটতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় চলে যান। পর্যটকরা গোসল করতে নেমে চোরাবালি ও গুপ্তখালে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছেন। শুধু ছয় মরদেহ উদ্ধার নয় সোমবার সকালেই এমন ছয়জনকে জীবিত উদ্ধারের তথ্য জানান লাইফগার্ডরা।