তেহরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। এই হামলায় সালামিসহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রায়াত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির আইআরজিসির প্রধান হোসেইন সালামি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। তেহরানে আইআরজিসির সদরদপ্তরেও আঘাত হেনেছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকায় হামলায় বেসামরিক নাগরিকের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন শিশুও নিহত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, শুক্রবার ইরানের সংবাদমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুসারে, দেশটির প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা নাতানজসহ বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
আইআরজিসির সদরদপ্তরও হামলার শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। ওই স্থাপনা থেকে আগুন ও ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে।
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি শাখা এবং দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী সংগঠন হিসেবে বিবেচিত। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই হামলায় ইরানের দুই জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানীও নিহত হয়েছেন।
ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার সাবেক প্রধান ফিরেদুন আব্বাসি এবং তেহরানের ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ মেহদি তেরাঞ্চি এই হামলায় মারা গেছেন।
দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোর দেখভাল করে থাকে পরমাণু শক্তি সংস্থা (এইওআই)। আব্বাসিকে এর আগেও একবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। ২০১০ সালের ওই হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। তবে ১৫ বছর পর এসে আরেক হামলায় প্রাণ হারাতে হলো এই বিজ্ঞানীকে।
এদিকে, ইসরায়েলের এই হামলার চূড়ান্ত জবাব দেওয়া হবে বলে ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অন্তত ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার খবরে এমন দাবি করা হয়েছে।
এপির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নাতানজ পরমাণু স্থাপনার একটি অংশ ভূ-উপরিভাগে এবং বাকিটা ভূগর্ভে অবস্থিত। পারমাণবিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সেখানে ইউরেনিয়াম গ্যাস ঘূর্ণায়নের জন্য একাধিক সেন্ট্রিফিউজ হলঘর রয়েছে।
ইরানীয় কমান্ডার ও ক্ষেপণাস্ত্র কারখানাকে হামলার নিশানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। এ ছাড়া পরমাণু বোমা, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও নাতানজ পরমাণু সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় কাজ করা বিজ্ঞানীদেরও হামলার নিশানা বানানো হয়েছে।