ঢাকার শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী আদালতের প্রতি তার আস্থাহীনতা প্রকাশ করে জামিনের আবেদন করেননি। একই কারণে তিনি ওকালত নামায় স্বাক্ষর করেননি।
ওই মামলায় লতিফ সিদ্দিকী ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ ১৬ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। শুক্রবার দুপুরে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানির পর মহানগর হাকিম সারাহ্ ফারজানা হক এ আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, শাহবাগ থানার সহকারি পরিদর্শক (এসআই) তৌফিক হাসান আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৭০ থেকে ৮০ জন আসামি রয়েছেন।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আসামিদের এজলাসে তোলা হয়। এ সময় তাদের হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ছিল। কাঠগড়ায় সবার সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন লতিফ সিদ্দিকী। এসময় তাকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়।
এ সময় আদালতের অনুমতি নিয়ে আইনজীবীরা আসামিদের স্বাক্ষর নিতে চান। লতিফ সিদ্দিকী বাদে অন্য অধিকাংশ আসামিই ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেন। লতিফ সিদ্দিকীর কাছে সাইফুল ইসলাম সাইফ স্বাক্ষর নিতে যান। তবে তিনি ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেননি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখিসহ অন্যরা জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শুনানি শেষে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সাইফ সাংবাদিকদের জানান, ‘লতিফ সিদ্দিকীর জামিনের প্রার্থনা যখন তার কাছে ওকালতনামা স্বাক্ষর করতে যাই, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে। তখন তিনি বলেন, যে আদালতের জামিন দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তার কাছে কেন জামিন চাইব? আমি ওকালতনামায় স্বাক্ষর করব না, জামিন চাইব না। আদালতের প্রতি তার আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন।’
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল আলোচনা থেকে লতিফ সিদ্দিকী, অধ্যাপক কার্জনসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। রাতে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসদমন আইনে মামলা দেওয়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মামলার ১৬ জনের মধ্যে অন্য আসামিরা হচ্ছেন– আব্দুল্লাহ আল আমিন (৭৩), মঞ্জুরুল আলম (৪৯), কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল (৭২), গোলাম মোস্তফা (৮১), মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু (৬৪), জাকির হোসেন (৭৪), তৌছিফুল বারী খান (৭২), আমির হোসেন সুমন (৩৭), আল আমিন (৪০), নাজমুল আহসান (৩৫), সৈয়দ শাহেদ হাসান (৩৬), মোঃ শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার (৬৪), দেওয়ান মোহম্মদ আলী (৫০) এবং আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম (৬১)।