জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রোববার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
বেলা ১২টা ১০ মিনিটের দিকে শুরু হওয়া আলোচিত এই মামলার বিচার কার্যক্রম বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করছে। এই প্রথম কোনো বিচারিক কার্যক্রম রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি প্রচার করা হচ্ছে।

ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগে শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি করা হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘আসামিরা জুলাই বিপ্লবের মুক্তিকামী জনতাকে স্তব্ধ করে দেওয়ার উদ্দেশ্য রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আসামিরা ক্ষমতায় টিকে থাকার উদগ্র বাসনায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা চূড়ান্ত ব্যবহার করে ছাত্র আন্দোলনে নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ ও সহিংসতা চালান।’
‘আমরা বিচার শুরু করছি, এই বেদনাদায়ক অধ্যায়ের সংগঠিত অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য। জুলাই বিপ্লবে নিরস্ত্র নিরীহ সাধারণ নাগরিক, বিশেষ করে তরুণ, ছাত্র, যুবা, নারী ও শিশু রাজপথে নেমে এসেছিলেন–তারা একটি ন্যায়ভিত্তিক ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য, বৈষম্য নামক কু-প্রথা অবসানের দাবিতে অহিংস ও ন্যায়সংগত আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন।’
চিফ প্রসিকিউটর জানান, অভিযোগের সপক্ষে প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য, ভিডিও ফুটেজ, আসামিদের অডিও ক্লিপিংসহ মোট দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার তথ্যসূত্র দাখিল করা হয়েছে।
এর আগে গত ২০ মে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম নিজের ফেসবুকের এক পোস্টে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য কোর্টরুম ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। ট্রায়ালের যে কোনা পর্ব আদালতের অনুমতিক্রমে সরাসরি কিংবা রেকর্ডকৃত পদ্ধতিতে গণমাধ্যমে কিংবা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হতে পারবে।’
গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটর বরাবর এই অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে এসেছে।