রোববার (১১ জ্যৈষ্ঠ) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী। প্রেম, দ্রোহ, সাম্য ও জাতীয় চেতনার এই কবি আজও বাঙালির আদর্শিক পথচলার অনন্ত প্রেরণা। বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন ও সংগ্রামে তিনি হয়ে আছেন এক মহাপুরুষ।
নজরুলের সাহিত্যজীবন লেখনি ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সমাজ বদলের আন্দোলনেও। দ্রোহের সুরে তিনি যেমন শাসকগোষ্ঠীকে প্রশ্ন করেছেন, তেমনি প্রেমের ছায়ায় জাগিয়েছেন মানবিকতার বোধ। নারীর স্বাধীনতা, শ্রেণী বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং ধর্মীয় সহাবস্থানের যে সেতু তিনি গড়েছিলেন, তা আজও প্রাসঙ্গিক।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন হয়ে ২০২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থান– প্রতিটি লড়াই-সংগ্রামে প্রেরণা জুগিয়েছে তার শেকল ভাঙার কবিতা ও গান। কবিতার পাশাপাশি নজরুলগীতি সমৃদ্ধ করেছে বাঙালি সংস্কৃতি চর্চা।
‘লেটোর দলের’ গায়ক থেকে কবি, গ্রামের মোয়াজ্জিন থেকে তুরস্ক যুদ্ধের সৈনিক, সাংবাদিক থেকে সাহিত্যিক—নজরুল ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। তার সৃষ্টি ‘বিদ্রোহী’, ‘ভাঙার গান’, ‘কামাল পাশা’ ও ‘অগ্নিবীণা’—বাংলা সাহিত্যে যুগান্তকারী সংযোজন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তৎকালীন সরকার কবিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। এরপর ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডি.লিট উপাধি দেয় এবং ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রীয়ভাবে নাগরিকত্ব ও একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
তার মৃত্যু হয় ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট। কিন্তু নজরুল আজও ‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ জীবন্ত ও প্রাসঙ্গিক।