দাবি পূরণের আশ্বাসে জবির আন্দোলন স্থগিত

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
তিন দফা দাবি পূরণের তথ্য শিক্ষার্থীদের জানান ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ। ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি সরকার মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ।

দাবি পূরণের এ আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা এসেছে। তবে শিক্ষার্থীদের একাংশ ‘রোডম্যাপ’ দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কাকরাইল মসজিদের মোড়ে আন্দোলনস্থলে পৌঁছে ইউজিসি চেয়ারম্যান অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের কথা জানান। এরপর শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে তিনি গণ-অনশন ভাঙান।

সরকারের সিদ্ধান্ত জানার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। তিনি সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সেগুলো উল্লেখ করে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আবাসন সংকটের কথা ভেবে খুব দ্রুত অস্থায়ী হল নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নে সবকিছু করা হবে।

এ সময় ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শরমীন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন উপস্থিত ছিলেন। এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী অনশন ভাঙলেও কিছু শিক্ষার্থী অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তিন দফা দাবি পূরণের রোডম্যাপ ঘোষণা না করা পর্যন্ত তারা অনশন ভাঙবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা -এই তিন দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করেন জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে তাদের লংমার্চ কাকরাইলে পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে বাধা পার হয়ে শিক্ষার্থীরা যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন।

এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। টানা তিন দিন তারা এই কর্মসূচি চালিয়ে আসলেও সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যাচ্ছিল না। বুধবার রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শিক্ষার্থীদের মাঝে গেলে ‘বোতল নিক্ষেপের’ মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। তখন তিনি চলে আসেন।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমাবেশ এবং বিকেল চারটা থেকে গণঅনশন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় বার্তা আসে, সরকার সব দাবি মেনে নিতে আলোচনা শুরু করেছে ইউজিসি চেয়ারম্যান ও উপাচার্যের সঙ্গে।

রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে ‘আন্দোলন স্থগিতের’ ঘোষণা দেন। তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। তারা দাবি বাস্তবায়নের রোডম্যাপ চেয়েছেন।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *